স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকালে দেশে যখন জাতীয় ঐক্য ও উচ্ছ্বাস উদ্দীপনা চলছিল, তখনই তা রুখে দিতে হেফাজতে ইসলাম মাঠে নেমে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছে বলে অভিযোগ করে এর পেছনে কলকাঠি নাড়া জামায়াত ইসলামের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী।
বুধবার (৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এই দাবি জানান। সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী বলেন, হেফাজত-জামাতিরা দেশে শান্তি- স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি স্বরূপ। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখা যখন অনিবার্য, তখনই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামাত ও হেফাজতিরা দেশ বিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে ঘিরে তারা দেশে নৈরাজ্য ও সহিংস পরিবেশ তৈরি করেছে। দেশের মাটিতে এইসব ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর কারণে মোদির কি ক্ষতি হয়েছে আর দেশের কি লাভ হয়েছে? এই জিজ্ঞাসা আজ সমগ্র জাতির। তাদের হীনস্বার্থ হাসিলের বলি হলো নিরীহ ২০টি তাজা প্রাণ। তিনি বলেন, গুজরাটের কসাইখ্যাত নরেন্দ্র মোদি ভারতে হাজার হাজার মুসলমানদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। তার জন্য আমরা আগেও মানববন্ধন বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ জানিয়েছি।
এখনো এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। কিন্তু সহিংসতার জবাব সহিংসতা দিয়ে হয় না। সহিংসতা কোনো উত্তম সমাধান হতে পারে না। বিশৃংখলা ও ফেতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টি হত্যার চেয়েও জঘন্য অপরাধ। সীমালংঘনকারীকে আল্লাহ পাকও পছন্দ করেন না। হরতাল দিয়ে মানুষকে জিম্মি করে রাখা ইসলামী নির্দেশনা পরিপন্থী হঠকারী কাজ। হেফাজতিরা নিজেদের ইসলামী দল হিসেবে প্রচার করলেও বার বার পবিত্র কোরআনের এই মর্মবাণী তাদের সহিংসতার কারণে উপেক্ষিত হয়েছে। প্রকৃত আলেম কখনো সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও লুটতরাজ করে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে শান্তিকামী মানুষের শান্তি নষ্ট করতে পারে না। কথায় কথায় সন্ত্রাস, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ইসলাম সমর্থন করেনা। এটা প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার আদর্শও নয়। ক্ষমা, মাহাত্ম্য, উদারতা ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করাই প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াছাল্লামার প্রকৃত শিক্ষা।
সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, মোদির সফরের বিরোধিতা করে ঢাকা-চট্টগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজত যে তাণ্ডব চালিয়েছে, সরকারি বেসরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, জ্বালাও পোড়াও করেছে, তাতেই প্রতীয়মান হয়, এরা আদতে ইসলামের হেফাজতকারী নয়, এরা উগ্র সন্ত্রাসবাদী ও জঙ্গিগোষ্ঠী। হেফাজতের তাণ্ডবের পেছনে যুদ্ধাপরাধী দল জামাতও জড়িত। এরাই মূলত কলকাঠি নাড়ছে। তাই, হেফাজতি জামাতিদের বিচারের মুখোমুখি করা হোক। না হয় তাদের আস্ফালন আরো বেড়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, নিজেদের যতোই অরাজনৈতিক ইসলামী সংগঠন দাবি করুক, বাস্তবে হেফাজতিদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে। এদের বাড়াবাড়ি ও ঔদ্ধত্যের উৎস কোথায় তা সরকারকে খতিয়ে দেখতে হবে। সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী হেফাজতের তাণ্ডবের পেছনে জামায়াতে ইসলাম জড়িত অভিযোগ করে তিনি জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান এবং দেশবাসী ও হাক্কানী পীর ওলামা মাশায়েখকে এই উগ্রবাদী অপশক্তিকে প্রতিহত করতে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানান।