ভারতের মেয়েদের চেয়ে বাংলাদেশের মেয়েদের শিক্ষার হার বেশি ও নারীপ্রতি জন্মহার কম, যা অনেক আগে থেকেই জানা। এও জানা যে, ভারতের চেয়ে বাংলাদেশে নবজাতক ও ৫ বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হারও কম।
এরসঙ্গে সম্প্রতি যোগ হয়েছে মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি)। এই সূচকে ভারতকে পরপর দুইবার পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। এবার ফের ভারতের চেয়ে মাথাপিছু জিডিপি ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাস এমনটাই বলছে। গতকাল মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) রাতে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক (ডব্লিউইও) প্রকাশ করে আইএমএফ। এই আউটলুক অনুযায়ী, এ বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়াবে ২ হাজার ১৩৮ দশমিক ৭৯৪ ডলার। আর ভারতের মাথাপিছু জিডিপি হবে ২ হাজার ১১৬ দশমিক ৪৪৪ ডলার। ফলে পরপর দুইবার ভারতকে পেছনে ফেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
আর করোনার (কোভিড-১৯) প্রভাব কাটিয়ে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ। সেখানে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হবে। আইএমএফ বলেছে, ভারতের প্রবৃদ্ধি বাড়লেও আগের বছর ভারতের অর্থনীতি বেশি মাত্রায় সংকুচিত হয়েছিল। এ কারণে আবারও ভারতকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের। চলতি বছরের পূর্বাভাসে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি বেশি হবে ২২ দশমিক ৩৫ ডলার।
মূলত এবার রেকর্ড পরিমাণ প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা বলা হলেও আগের বছরের উচ্চ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির প্রভাবেই ভারত এখনো পিছিয়ে। আইএমএফের ধারণা, আগামী বছরও দেশটি পিছিয়ে থাকবে।
আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে এর সদস্য ১৮৮টি দেশের অর্থনীতি কেমন যাবে, তা নিয়ে ২০২১ ও ২০২২ সালের প্রক্ষেপণ রয়েছে। বাংলাদেশসহ কিছু দেশের ক্ষেত্রে প্রক্ষেপণ অর্থবছরের ওপর। আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভা চলাকালীন আইএমএফ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করল।
আইএমএফের মতে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি বাড়বে। গত অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এবার তা বেড়ে দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী আগামীতে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে। সংস্থাটি মনে করছে, বৈদেশিক লেনদেনে বাংলাদেশের চলতি হিসাবে ঘাটতি থাকবে। চলতি হিসাবে গত অর্থবছরে ঘাটতি ছিল জিডিপির ১ দশমিক ১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে তা ১ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে।
বিশ্ব অর্থনীতি
আইএমএফের ধারণা, ২০২১ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, যা তাদের আগের পূর্বাভাসের চেয়ে ১ শতাংশ পয়েন্ট কম। ২০২২ সালে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ, যা সংস্থার আগের পূর্বাভাসের সমান।