বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক ও জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক ও জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সাম্প্রতি শান্তিরক্ষীদের প্রাণহানির সংখ্যাও উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। এযাবত বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীগণের মধ্যে ১৫৮ জন প্রাণোৎসর্গ করেছেন এবং ২৩৭ জন আহত হয়েছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশনে আগামী দিনের নতুন সংকটগুলো মোকাবিলায় শান্তিরক্ষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদি দিয়ে প্রস্তুত করা এখন সময়ের দাবি।’
সোমবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আয়োজিত অনুশীলন ‘শান্তির অগ্রসেনা’র সমাপনী অনুষ্ঠানে দেয়া প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বঙ্গবন্ধু সেনানিবাসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাবের এই সময়ে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের নতুন সংকট নিরসনে বিশেষকরে করোনাভাইরাসের মত অদৃশ্য শত্রুর মোকাবেলায় শান্তিরক্ষীদের যথাযথ প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্বশান্তি নিশ্চিত করা অতীতের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনাভাইরাসের মতো অদৃশ্য শত্রুর আবির্ভাব, প্রযুক্তির দ্রুত প্রসার এবং সময়ের অগ্রযাত্রার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন হুমকির উপাদান সৃষ্টি হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে, ‘অনুশীলন শান্তির অগ্রসেনায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সাম্প্রতিক সময়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কিছু ঘটনা অংশগ্রহণকারীদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে, যাতে করে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমাদের ভবিষ্যত শান্তিরক্ষীরা সুপ্রশিক্ষিত হয়ে উঠতে পারে। এই অনুশীলনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশনে নারীদের অবদান তুলে ধরা হয়েছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত’।
সরকার প্রধান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে অত্যন্ত নিখুঁত এবং সফলভাবে এই অনুশীলনটি আয়োজন করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। জাতির পিতার শান্তিদর্শন প্রতিষ্ঠায় এই বহুজাতিক অনুশীলনটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮শ’ নারী শান্তিরক্ষীসহ ১ লাখ ৭৫ হাজারের অধিক বাংলাদেশেী শান্তিরক্ষী ৫টি মহাদেশের ৪০টি দেশের ৫৪টি মিশনে অংশগ্রহণ করেছে। বর্তমানে ৭ হাজারের অধিক বাংলাদেশী সেনা ও পুলিশ সদস্য ১০টি মিশনে শান্তিরক্ষার উদ্দেশ্যে মোতায়েন আছে।
তিনি বলেন, আমাদের শান্তিরক্ষীগণ যে মিশনেই গেছেন, সেখানে জাতিসংঘের পতাকাকে সমুন্নত রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল করেছেন। একারণেই বাংলাদেশ আজ বিশে^র সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে।