নজরকাড়া সৌন্দর্য, সেইসাথে তেল হিসেবেও ব্যবহার রয়েছে। বলছি সূর্যমুখীর কথা। মাঠ জুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহে চোখ জুড়াতে আসছেন দর্শনার্থীরা।
আর এ দৃশ্যের দেখা মিলছে কচুয়ায় উপজেলায় ডুমুরিয়া, কালচোঁ, সাচার, পালাখাল, রহিমানগরে বিভিন্ন এলাকায়।
যেখানে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সূর্যমুখী চাষ। কম সময় আর স্বল্প খরচে ভালো লাভ পাওয়ায় চাষীরাও বেশ খুশি। সূর্যমুখীর নজরকাড়া সৌন্দর্য পুলকিত করে যে কাউকেই। সেই সাথে তেল হিসেবেও এর ব্যবহার রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, সয়াবিনের চেয়ে সূর্যমুখীর তেল বেশি পুষ্টিগুনসম্পন্ন। আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়ায় এ ফুলের চাহিদা বেড়েই চলেছে। এ কারণে কচুয়ায় এই সর্বপ্রথম সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে । কচুয়া উপজেলায় ৩০ জন চাষী এ ফুল চাষ করেছেন। মাঠ জুড়ে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছেন দর্শনার্থীরা
। চাষীরা বলেন, সূর্যমূখী চাষে এক বিঘা জমিতে খরচ হয় ৮-১০ হাজার টাকা। সামান্য রাসায়নিক সার আর দুইবার সেচ দিতে হয়। নভেম্বরে বীজ বপনের পর ৮০ থেকে ৯৫ দিনের মধ্যে তোলা যায়। প্রতি এক বিঘা জমি থেকে উৎপাদিত বীজ থেকে আয় হবে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানী হিসেবেও ব্যবহার করা যয়। অন্য ফসলের তুলনায় খরচ কম, সে কারণে লাভ বেশি হওয়ার কারণে এই ফুলের চাষ করছি। আগামীতে চাষের আগ্রহও প্রকাশ করছেন কেউ কেউ।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সূর্যমুখী চাষ বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ফুলেই পাওয়া যায় বীজ। আর সেই দৃষ্টিকাড়া ফুলের মধ্যে কেউবা সেলফি, কেউবা স্বজন নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছবি তুলতে ভিড় করছে সব বয়সের নারী পুরুষ। সরকারি কর্মকর্তারাও পরিবার-পরিজন নিয়ে সেখানে ছুটে যাচ্ছেন।
কচুয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (লিটন) জানান, নোয়াখালী ফেনী লক্ষীপুর চট্রগ্রাম ও চাঁদপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প এবং রাজস্ব প্রণোদনা আওতায় ২০২০-২১ অর্থ বছরে কচুয়া উপজেলায় ৩০ জন কৃষকদের বারি সূর্যমুখী-৩ জাতের বীজ দেওয়া হয়েছে। তেল জাতীয় অন্যান্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখী বীজে তেলের পরিমান ৪০-৪৫ শতাংশ রয়েছে। সূর্যমুখীর তেল অন্যান্য সাধারণ তেলের চাইতে পুষ্টিমান ভালো। কোলেস্টরেলমুক্ত সূর্যমুখীর তেলে রয়েছে অধিক পুষ্টিগুণ। ফলে দিনদিন চাহিদা বাড়ছে সুর্যমুখীর।
উল্লেখ্য যে, কচুয়া উপজেলার আগ্রহী সকল কৃষি তথা প্রকৃতিপ্রেমী শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ এই ফসলগুলো নষ্ট করবেন না আপনারা যদি সুর্যমুখী আবাদ করতে চান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কচুয়া আপনাদের আগামীদিনে সার্ভিক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। সূর্যমুখী কচুয়াতে আগামীদিনের সম্ভবনাময়ী অর্থকরী তৈল ফসল এটি নষ্ট করে কৃষককে অনাগ্রহ না করতে বিশেষ অনুরোধ রইলো। এই বছর পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ শুরু করে। সূর্যমুখীর তেলকে জনপ্রিয় করতেই এ উদ্যোগ তাদের। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসেন আগ্রহী চাষীরা। পরামর্শ ও বীজ নিয়ে অনেকেই এখন সূর্যমুখীর আবাদ শুরু করেছেন।
চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে চাষীরা ব্যক্তি উদ্যোগে সূর্যমুখীর আবাদ শুরু করেছেন। সূর্যমুখী বীজ একটি লাভজনক শস্য। সূর্যমুখী তেলের নানাবিধ স্বাস্থ্যগত গুনাগুন রয়েছে। সূর্যমুখী তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ জনপ্রিয় করার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করা হচ্ছে। চাষীদের প্রশিক্ষণ, বীজসহ নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।