সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০২:৫৩ অপরাহ্ন

মতলবের মেঘনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

সুমন আহমেদ / ৮৯ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০২২

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদী থেকে দিন-রাত অবাধে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। অসংখ্য অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও ক্রয়-বিক্রয় চলাচ্ছে একটি সিন্ডিকেট। এতে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে।
অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে একাধিকবার নির্দেশ দেয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প, প্রস্তাবিত ইকোনমিক জোন ও প্রস্তাবিত হাইটেক পার্কসহ চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়িঘর ও ফসলি জমি। এরই মধ্যে উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বাহেরচর, নাছিরাকান্দি, কাউয়ারচর’সহ আশ্রয়ন প্রকল্প নদীতে বিলীন হওয়ার হুমকিতে রয়েছে। মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলও রয়েছ হুমকির মুখে।

রোববার সকালে ইউএনও আশরাফুল হাসান বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে মেঘনা নদীতে অভিযান চালান। এ সময় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে মা ড্রেজিং প্রকল্পের মালিককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ২জন ড্রেজারের শ্রমিক ও ড্রেজার আটক করা হয়। পওে মুচলেক নিয়ে ড্রেজার শ্রমিক ও ড্রেজার ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. হেদায়েত উল্ল্যাহ, মোহনপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান।

সরেজমিন দেখা যায়, অবৈধভাবে প্রতিদিন ভোর থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত প্রায় ২৪ ঘণ্টাই ৩০-৩৫টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর তা শত শত ভলগেড, কার্গো ও ট্রলার দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। যে চক্রটি বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে তাদের এ-সংক্রান্ত কোনো অনুমতি বা অনুমোদনও নেই। প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে লাখ লাখ টাকার বালু। পেশিশক্তির বলে সিন্ডিকেটটি অবৈধভাবে বালু বিক্রি করে আসছে। এ জন্য বৃহত্তর মতলববাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ, তীব্র অসন্তোষ ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এরই আগে মাঝে মধ্যে নামকাওয়াস্তে কিছুু অভিযান হলেও অবৈধ এ কাজ বন্ধ হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, মেঘনা নদীর নাছিরাকান্দি চর থেকে মুন্সিগঞ্জের আফসার উদ্দিন চেয়ারম্যান, মতলব উত্তরের কাজী মিজানুর রহমান ও কাজী মতিনের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট গ্রুপ প্রতিদিন ৩০-৩৫ টি ড্রেজার বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনকে হাত করে মেঘনা নদী থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।

কলাকান্দা ইউপির চেয়ারম্যান ছোবহান সরকান সুভা বলেন, বালু খেকো সিন্ডিকেট গ্রুপের সদস্যরা দীর্ঘদিন থেকে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন। প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় এ বালু উত্তোলন হয়ে আসছে। কোনো ব্যক্তি তাদের কথা শুনছেন না। প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

মতলব উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি মো. হেদায়েত উল্ল্যাহ বলেন, উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের নাছিরাকান্দি এলাকায় অবৈধভাবে ড্রেজারের মাধ্যমে মাটি উত্তোলনের প্রস্তুতিকালে ঘটনাস্থলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, আইনের ড্রেজার মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসন, কর্তৃক মোবাইল কোর্ট নিয়মিতভাবে অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ