করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বাংলাদেশেও ইতিমধ্যে ধরনটি শনাক্ত হয়েছে। এর প্রকোপ গুরুতর আকার ধারণ করলে দেশে আবার লকডাউনের ঘোষণা আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
শনিবার (১ জানুয়ারি) বিকালে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রমের বুস্টার ডোজ প্রদানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এই ইঙ্গিত দেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ভালো অবস্থানে রয়েছি। আমাদের দেশের সংক্রমণ এখন বাড়ছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। বিভিন্ন দেশে লকডাউনও দিচ্ছে। সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে বেড়ে গেলে আমাদেরও লকডাউনে চলে যেতে হবে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে টিকাদানের পাশাপাশি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই করোনা প্রতিরোধ সম্ভব। আমরা ষাটোর্ধ্ব, ফ্রন্টলাইনারদের বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করেছি। আমাদের বুস্টার দিতে প্রায় আড়াই কোটি ডোজ লাগবে। এছাড়া সাত কোটি ভ্যাকসিন প্রথম ডোজ ও পাঁচ কোটি ভ্যাকসিন দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। মোট সাড়ে ১২ কোটির মতো ডোজ দিয়েছি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে টিকা কার্যক্রম খুব সফলতার সঙ্গে চলছে। যা টিকা লাগবে তার সব ব্যবস্থা আমাদের করা আছে। টিকা দেওয়ার জন্য যে সিরিঞ্জ লাগে তার জন্য চায়না থেকে নয় কোটি সিরিঞ্জ আমরা দেশে এনেছি। আপনারা জানেন টিকা কার্যক্রম আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে দিচ্ছি। এই কার্যক্রম আরও বেগবান করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে আমরা টিকা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। তাতে আমার দেখেছি যে, জানুয়ারি মাসে আমরা চার কোটি ডোজ দিতে পারবো। এভাবে দিতে পারলে এপ্রিল-মে মাসে আমরা বাংলাদেশের টার্গেটেড মানুষদের টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পারবো।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। কারণ মাস্কই আমদের এই করোনা থেকে মুক্তি দিতে পারে। আমরা মাস্ক না পরলে সংক্রমিত হবো। টিকা আমাদের ঝুঁকি কমায়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কমায়। কিন্তু সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে পারে না। তাই সবার কাছে আহ্বান, সবাই সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনা আক্রান্তদের জন্য দেশে রেটিনোভির ও নির্মাট্রেলভির নামের দুটি ওষুধ বাজারজাত করা হচ্ছে। এই ওষুধ দুটি করোনা আক্রান্তদের জন্য ৮৮ ভাগ কার্যকরী। ওষুধ দুটি করোনা ভ্যাকসিনের কোনো বিকল্প নয়। যারা আক্রান্ত হয়নি তারা ভ্যাকসিন নেবে আর যারা আক্রান্ত তারা এই ওষুধ সেবন করবে।’
এসময় জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশাদ উল্লাহ, সিভিল সার্জন ডা. লুৎফর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, পৌর মেয়র রমজান আলী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, গড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।