ওমর আলী বলেন, ‘শুরু থেকেই ফেরিটি এক দিকে কাত হয়ে চলছিল। ফেরি ডোবায় আমার গাড়িটিও ডুবে যায়। গাড়ির বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাড়িটি মেরামত করার মতো টাকাপয়সাও নেই। কী করব, বুঝতে পারছি না।’
পটুয়াখালীর বাসিন্দা সোয়েবুর রহমানও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ট্রাক কেনেন। শুক্রবার দুপুরে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাটে কথা হলে তিনি জানান, নদীতে ডুবে যাওয়ায় গাড়ির বডি (কাঠামো) ও ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া পুরো গাড়ির সার্ভিসিং করাতে হবে। এতে তিন থেকে চার লাখ টাকা লাগবে।
সোয়েবুর রহমান বলেন, ‘ফেরিতে তো আমরা ফ্রি যাই না। আমরা ভাড়া দিয়েই নদী পারাপার হই। বিআইডব্লিউটিসির গাফিলতি বা অসাবধানতাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, এ ঘটনায় আমাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই। কারণ, ব্যাংক লোন নিয়ে আমাদের গাড়ি কিনতে হয়েছে। গাড়ির উপার্জনেই পরিবার নিয়ে আমাদের সংসার চলে।’
মাগুরার বাসিন্দা কাভার্ড ভ্যানের মালিক হারুনার রশিদ বলেন, ‘আমার গাড়িটি দুই ভাগ হয়ে গেছে। গাড়ির চেসিস বাঁকা হয়ে গেছে। কেবিনটাও দুমড়েমুচড়ে গেছে। গাড়িটি ওঠানোর পর মেরামতের জন্য যশোরে নিতে হবে। এতে আমার প্রায় সাত লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমার পক্ষে তো এই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।’ তিনি সরকার ও ফেরি কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
ফেরির সঙ্গে নদীতে ডুবে যাওয়া অপর একটি কাভার্ড ভ্যানের মালিক কামাল মোল্লা বলেন, ‘জমিজমা বেচে ও লোন নিয়ে গাড়িটি কিনেছিলাম। এখনো লোনের টাকা বাকি। আমরা তো পথে বসে গেলাম। সরকার যেন আমাগো দিকে সুনজর দেয়।’
মাগুরার অপর একটি কাভার্ড ভ্যানের মালিক মো. সাহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমার গাড়িটি ২৪ ঘণ্টার বেশি নদীতে ডুবে ছিল। আমাদের ক্ষতিপূরণ না দিলে শেষ হয়ে যাব।’
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, কী কারণে ফেরিটি ডুবেছে, দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি তা তদন্ত করছে। ডুবে যাওয়া যানবাহনের মালিকদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়নি।