শিরোনাম
প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে পাইলটের মৃত্যু বাইডেনের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের হুমকি খুবই হতাশাজনক: ইসরাইল প্রথম ফ্লাইটে সৌদি আরব গেলেন ৪১০ জন হজযাত্রী ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১০৬৩৮ দেশবরেণ্য পরমাণু বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়ার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপজেলা ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে: সিইসি অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিএসএফ’র গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত গাজীপুরের তিন উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু সারাদেশে পরিবেশ রক্ষায় গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্টের রুল কেনিয়ায় বাঁধ ভেঙে ৪২ জন নিহত স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হাইকোর্টের নির্দেশ ৪ বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে উপস্থিতি প্রমাণ করে আস্থা ফিরেছে ভোটারদের: ইসি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা আগামীকাল
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৬:৩৯ অপরাহ্ন

রহিমানাগর গণহত্যা দিবস ৪ জুলাই: মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন

আফাজ উদ্দিন মানিক, কচুয়া (চাঁদপুর) / ২০১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার অন্যতম প্রসিদ্ধ বাজারের নাম রহিমানাগর। যা কয়েকটি উপজেলার ব্যবসায়ী এবং ক্রেতা বিক্রেতার মিলনমেলার জন্য যোগাযোগের অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রাচীনকাল থেকে উল্লেখিত রহিমানাগর কচুয়ার রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। ঘটনাবহুল রহিমানাগর প্রতিরোধের দূর্গ হিসেবে খ্যাত।

কচুয়ায় তৎকালীন রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ৬ দফা আন্দোলন, ১১ দফা ভিত্তিক আয়ুব বিরোধী গণঅভ্যুত্থান, বঙ্গবন্ধুর মুক্তি আন্দোলন, ইয়াহিয়া খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনসহ সকল আন্দোলন  ও নির্বাচনে এবং সু-মহান মুক্তিযুদ্ধে রহিমানাগরের ছাত্রলীগের রাজনীতিকদের অগ্রনী ভূমিকা প্রশংসনীয়। খেলাধুলাসহ বিভিন্ন চিত্ত বিনোদনে ও সাংস্কৃতি অঙ্গনে রয়েছে রহিমানাগরের সু-খ্যাতি।

হিন্দু ,মুসলিম ও নবীণ এবং প্রবীণদের মধ্যে রহিমানাগর অঞ্চলে ছিল কঠিন যোগাযোগ এবং সমন্বয়। যার কারনে পাকিন্তান আমলে ১৯৬৬ খ্রীঃ পাকিন্তানি পুলিশের দ্বারা হিন্দু সম্প্রদায় ও বাস্তহারাদের উপর চরম নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিল রহিমানাগরের সর্বস্তরের মানুষ। প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোড়দার করায় পুলিশ হাই স্কুলে ভিতর থেকে গুলি চালিয়ে ৬ জন লোককে হত্যা করে এবং বহুলোককে আহত করেছিল।

১৯৬৯ খ্রিঃ পাকিস্তানি জঙ্গি শাসকদের চরম অত্যাচারের সময় সাহসী বৃত্তে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের সৈনিকদের অত্যতম বীর সেনানী কচুয়ার মাননীয় এম পি এ মরহুম আলহাজ্ব সেকান্দার আলী ও স্থানীয় বঙ্গবন্ধুর অনুসারী এবং শিক্ষানুরাগীদের সহযোগীতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রদীপ্ত সূর্য শেখ মুজিবুর রহমানের নামানুসারে রহিমানাগর শেখ মুজিবুর রহমান ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। শিক্ষার আলো জ্বালাতে এই কলেজটি কচুয়া উপজেলার সর্বপ্রথম কলেজ।

২৭ মার্চ ১৯৭১, কচুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ সংগ্রাম কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদ প্রধান এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল হকের ব্যবস্থাপনায় রহিমানাগর বেগম আয়েশা বৌভানী হাই স্কুল মাঠে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছিল। ছাত্র-যুবকদের মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ পরিচলনা করেছিলেন দক্ষ প্রশিক্ষক মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্ত কচুয়ার গর্ব মোঃ সিরাজুল মাওলা এ বি এবং বিমান বাহিনীর দক্ষ সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়ুব আলী সহ আরো অনেক প্রশিক্ষক । কচুয়া থানা থেকে রাইফেল এনেও এখানে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করা হয় ।
৪ জুলাই ১৯৭১ বৃহস্পতিবার , রহিমানাগর বাজারদিন। সু-মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দিনে দুপুরে রহিমানাগর গণহত্যায় “যাদের রক্তে মুক্ত স্বদেশ”।  চারদিকে যখন মানুষ পাক-বাহিনীর অত্যাচার, হত্যা, লুন্ঠন এবং জ্বালাও-পোড়াও আতঙ্কে দিশেহারা এমনি ভীতিকর মুহূর্তে রহিমানাগর বাজারে পাক সেনা ও তাদের দোসর রাজাকার বাহিনী চারদিক থেকে আক্রমন চালায়। তাদের সম্মিলিত আক্রমনে গণহত্যা সংগঠিত হয়। উল্লিখিত গণহত্যায় যারা অকাতরে প্রাণ ‍দিয়েছেন তাঁদের মধ্যেঃ

১। বীর শহীদ জনাব জুনাব আলী (খাজুরিয়া)
২। বীর শহীদ জনাব আঃ ছামাদ (পাড়াগাঁও)
৩। বীর শহীদ জনাব আব্দুল মজিদ (পাড়াগাঁও)
৪। বীর শহীদ জনাব কাশিম আলী মাল (চাপাতলী)
৫। স্বর্গীয় মাহেন্দ্র চন্দ্র ধূপি (কহলথুড়ী)
৬। আহত পরে মৃত্যু স্বর্গীয় অনুকুল চন্দ্র দাস ( লুন্তি নোয়াগাঁও)।

নাম না জানা অনেকে আহত হয়েছেন। উল্লেখিত লোমহর্ষক হত্যাকান্ড দেখে  মানুষজন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফেলে রেখে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়।

রহিমানাগর গোহট ভুঁইয়া বাড়িতে রাজাকার কমান্ডার খালেকের ভাই আরইক্কা হত্যাকে কেন্দ্র করে শাহারপাড়, গোহট , নাওপুরাসহ গ্রামকে গ্রাম জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে লুটপাট করা হয়। আতঙ্কে ভয়ে নারী-পুরুষ শিশু ও অবলা মহিলা বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে চলে যায়।
রহিমানাগরে কচুয়া থানার দারোগা লাল খান মার্ডার হওয়া বা বিভিন্ন সময়ে পুলিশ এসল্ট হওয়াসহ বহু ঘটনার বিস্তারিত বিবরন লেখা একটু সময়ের ব্যাপার।
আজ রহিমানাগর গণহত্যা ‍দিবসে “যাদের রক্তে মুক্ত স্বদেশ” তাঁদেরকে স্বরণীয় বরণীয় করার মাধ্যম নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ