বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি’র চেয়ারম্যান, সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী বলেছেন, শিল্পায়ন ও নগরায়ণের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে প্লাস্টিক জাতীয় পণ্যের ব্যবহার বাড়ছে।
প্লাস্টিক অপচনশীল হওয়ায়, সহজে নিঃশেষিত হয় না এবং পরিবেশে টিকে থাকতে পারে শত শত বছর ধরে৷ বিশ্বের সাগর-মহাসাগরে প্রতিবছর প্রায় ৮০ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য জমছে। সমুদ্রের স্রোত প্লাস্টিক বর্জ্য ভাসিয়ে নিয়ে যায় এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে। প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষুদ্রতম ভগ্নাংশ বা ‘মাইক্রোপ্লাস্টিক’ বায়ুতাড়িত হয়ে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এটি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক উপাদান। সমুদ্র, নদীতে প্লাস্টিক বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর জীবন মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে। কেবল ক্ষুদ্র সামুদ্রিক প্রাণী নয়, বিশাল তিমি মাছও প্লাস্টিক দূষণে মারা পড়ছে। মাছের শরীরে ‘মাইক্রোপ্লাস্টিক’ সঞ্চিত হয়ে তা খাদ্যচক্রের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে। এমনকি প্লাস্টিক পুড়িয়ে ফেললেও বিভিন্ন ক্ষতিকারক গ্যাস নির্গত হয়।
তিনি আরো বলেন, প্লাস্টিক দূষণে শীর্ষ দেশ গুলোর একটি বাংলাদেশ। শুধু রাজধানীর চারপাশের চারটি নদীতে ৩০ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য পাওয়া গেছে। এর অর্ধেকই রয়েছে বুড়িগঙ্গায়।
২০১৪ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, বাংলাদেশে বছরে গড়ে মাথাপ্রতি প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহৃত হয় ৩.৫ কিলোগ্রামেরও বেশি। নগরায়ণের সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত বাড়ছে সে পরিমাণ। প্রতিদিন কেবল ঢাকা শহরে উৎপাদিত প্রায় ৩ হাজার ৫০০ টন বর্জ্যের মধ্যে ৩০ শতাংশ অপচনশীল। বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের জন্য সম্পদের খনি। ব্লু ইকোনোমির অগ্রযাত্রায়ও বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে এই প্লাস্টিক দূষণ।
বাংলাদেশে ২০০২ সালের জানুয়ারি থেকে পলিথিনের উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ ও ব্যবহারকে আইন করে নিষিদ্ধ করা হলেও আইনের বাস্তবায়ন নেই। প্লাস্টিক দূষণকে গুরুত্ব না দিলে, বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্ব নিজেদের বিপর্যয় ডেকে আনবে।
সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী বলেছেন, সম্প্রতি একটি উগ্রবাদী দলের উগ্র অনুসারীরা সনাতন ধর্মের লোকজনের ওপর যে নৃশংস হামলা চালিয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও ইসলামের দৃষ্টিতে গর্হিত অপরাধ। উগ্রপন্থীরা কখনো প্রিয় নবীজীর (দ.) অনুসারী হতে পারে না। কারণ আমাদের প্রিয় নবীজী ছিলেন উদার ও সব মানুষের প্রতি দয়াশীল। গুজব রটনার মাধ্যমে অন্য ধর্মের অনুসারীদেরকে আঘাত করে সম্প্রীতি বিনষ্ট করা কখনো মুসলমানদের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। এরা কোন ধর্মের অনুসারী হতে পারেনা এরা কখনো ধর্মের শান্তির পক্ষ্যের অনুসারী নয়।এসব ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের প্রতি হুমকি হিসেবে চিহ্নিত দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেয়ার দাবি জানান তিনি।
২১শে মার্চ, ফরিদপুর হাটকৃষ্ণপুর স্কুল মাঠে পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (সা:) উপলক্ষ্যে আয়োজিত ইসলামী মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করে, প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা ও মানুষকে সচেতন করেন সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, মুফতি বাকী বিল্লাহ্ আল আজহারী, মওলানা শেখ সাদী আবদুল্লাহ সাদেকপুরী মাইজভান্ডারী,মওলানা রুহুল আমিন ভুইয়া চাদপুরী,হাফেজ মুফতি মাকসুদুর রহমান, হাফেজ মওলানা মনসুর আলি মাইজভাণ্ডারী, স্থানীয় খলিফাবৃন্দ, আঞ্জুমান-এ-রাহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া ও মইনীয়া যুব ফোরামের নেতৃবৃন্দ। প্রিয় নবিজী (সা) এর প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ শেষে বিশ্বমানবতার কল্যাণ কামনায় মুনাজাত পরিচালনা করেন সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী। হাজারো আশেকানবৃন্দ মুনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।