বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি’র চেয়ারম্যান, সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী বলেছেন, বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে ১৯ মিনিটের অলিখিত ভাষণের মাধ্যমে সমগ্র জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য একতাবদ্ধ করেছিলেন। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত ও ২ লক্ষ মা-বোনদের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত লাল সবুজের পতাকার মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব এদেশের প্রতিটি নাগরিকের। যার যার অবস্থান থেকে দেশের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্যগুলো নিষ্ঠার সাথে পালন করে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সভা, সেমিনার, সমাবেশে জ্বালাময়ী বক্তব্যে নয়, বরং নিজের কর্মের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি প্রত্যয়ের স্বাক্ষর রাখতে হবে। দেশের দূর্যোগ-সংকটে সর্বস্ব উজার করে এগিয়ে আসতে হবে। শান্তি-শৃঙ্খলা-সম্প্রীতি-ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে। দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাসসহ সকল সামাজিক ব্যাধিগুলোকে প্রতিহত করতে হবে। মাইজভাণ্ডার শরীফ শুধু ধর্মীয় কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ গতানুগতিক কোন দরবার বা গোষ্ঠী নয়। প্রায় ২৫০ বছর আগে চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে ওঠা সূফিবাদ চর্চার প্রাণকেন্দ্র এ দরবার, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এদেশের মাটি ও মানুষের সাথে আত্নিক বন্ধনে আবদ্ধ।
মুঘল সাম্রাজ্যের শেষাংশ, ব্রিটিশ আমল, দেশবিভাগ, ভাষা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এ দরবার শরীফের আউলিয়ায়ে কেরামগণ নিপীড়িত, শোষিত-বঞ্চিত মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন সবসময়৷ ক্ষমতা ও জাগতিক লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে ন্যায় ও সত্যকে প্রতিষ্ঠাই তাদের জীবনের আদর্শ।
তরিক্বা-এ-মাইজভাণ্ডারীয়া’র বৈশ্বিক রূপদানকারী, শায়খুল ইসলাম, ইমামে আহলে সুন্নাত, হযরত সাইয়্যিদ মইনুদ্দীন আহমদ আল হাসানী মাইজভাণ্ডারী (কঃ) জাতিসংঘ, ইউনেস্কোসহ আন্তর্জাতিক সভাগুলোতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বাংলাদেশের শান্তি-সম্প্রীতির মডেলকে সফলভাবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছেন।
১৯৮৮ সালে তিনি ‘আঞ্জুমান-এ-রাহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া’ নামে সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনটি ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ এর ভয়াবহ বন্যা, ১৯৯১, ২০০৭ এর প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ত্রাণসহায়তা প্রদান করে। বর্তমানে হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট ৫০টিরও বেশি সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বিশেষত করোনা সংকটে ৫ লক্ষাধিক পরিবারের মাঝে ত্রাণ, স্যানিটাইজারসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী, সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের জন্য পিপিই বিতরণ করেছে। মাইজভাণ্ডারী দর্শনে উদ্ধুদ্ধ মইনীয়া যুব ফোরামের যুবকরা বিনা পারিশ্রমিকে কৃষকদেরকে ধান কেটে দেয়া, ত্রাণ বিতরণ ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে। একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের শপথকে বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কোন দেশের ভবিষ্যৎ অনেকাংশে নির্ভর করে তার রাজনৈতিক পরিবেশ ও চর্চার ওপর। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি’র ব্যানারে জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের অগ্রযাত্রায় অবদান রাখাই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য।
মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করতে বি.এস.পি. অঙ্গিকারাবদ্ধ। ৭ মার্চ,গাজীপুর শহরে রাহমানিয়া মইনীয়া খানকাহ্ শরীফে ” ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস” উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির লক্ষ্য-উদ্দ্যেশ্যকে আবারো স্পষ্ট করেন। প্রিয় নবিজী (সা:) এর প্রতি দরূদ ও সালাতু সালাম পেশ শেষে বঙ্গবন্ধুসহ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের আত্নার মাগফিরাত কামনা ও দেশের কল্যাণ কামনায় প্রার্থনা করেন সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী মাইজভাণ্ডারী।