শিরোনাম
Free Tarot Card Analysis for Today: Unlocking Insights and Assistance পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা দেবে ইইউ দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি বাংলাদেশে নতুন গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করবে শেভরন ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা ২২ ডিসেম্বর শুরু সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে করা রিট খারিজ ইন্টারনেট সেবা ৩ ঘণ্টা বিঘ্ন হবে পূর্ণাঙ্গ রায় দেখে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: অ্যাটর্নি জেনারেল এনআইডি সংশোধন নিষ্পত্তির নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের কমলো স্বর্ণের দাম আ’লীগ দেশটাকে কারাগারে পরিণত করেছিল: জামায়াত আমির রাজনৈতিক প্রতিহিংসা অবসানের আহ্বান তারেক রহমানের দেশের ক্রান্তিকালে সেনাবাহিনী দিনরাত পরিশ্রম করছে: সেনাপ্রধান বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আটকে গেল ইসকনের ৫৪ সদস্য এফবিআই প্রধান হচ্ছেন কাশ প্যাটেল
বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ অপরাহ্ন

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

সম্পাদকীয় / ৪৭৭ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০

আমাদের জাতীয় জীবনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসটি একটি শোকাবহ দিন। একাত্তরের এই দিনে বাংলাদেশের ইতিহাসে সংযোজিত হয়েছিল এক কলংকজনক অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ের প্রাক্কালে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তার দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে। প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তারা হত্যা করে জাতির অনেক কৃতী সন্তানকে। এ হত্যাযজ্ঞের একটি বড় উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতা লাভ করতে যাওয়া বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করে ফেলা।

২৫ মার্চ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ শুরু করার পর থেকেই পাকিস্তানি বাহিনী ও তার দোসররা গণহত্যার পাশাপাশি বেছে বেছে কিছু মানুষকে হত্যা করে, যারা বিবেচিত হতেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিক হিসেবে। মুক্তিযুদ্ধের গোটা সময়টায় ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা শহরে হত্যা করা হয় তাদের। পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের পর হত্যাকারীরা ঢাকার রায়েরবাজার ও মিরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রেখে যায়।

১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পরপরই তাদের নিকট-আত্মীয়রা বধ্যভূমিতে স্বজনদের লাশ খুঁজে পান। বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী ও তার দোসররা এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নির্যাতন করেছিল পৈশাচিকভাবে। বুদ্ধিজীবীদের লাশজুড়ে ছিল আঘাতের চিহ্ন, তাদের কারও চোখ-হাত-পা বাঁধা, কারও শরীর ক্ষতবিক্ষত। লাশের ক্ষতচিহ্নের কারণে অনেকেই তাদের প্রিয়জনের মৃতদেহ শনাক্ত করতে পারেননি। অনেকের লাশ খুঁজেও পাওয়া যায়নি। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম বর্বর একটি ঘটনা, যা বিশ্বব্যাপী শান্তিকামী মানুষকে স্তম্ভিত করেছিল। প্রাণ রক্ষার্থে অথবা প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে অনেক বুদ্ধিজীবী দেশত্যাগ করায় তারা রেহাই পান ওই হত্যাযজ্ঞ থেকে। নয়তো তাদেরও হতে পারত একই পরিণতি।

বুদ্ধিজীবীদের অপরাধ ছিল, তারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনসাধারণকে স্বাধিকারের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে তুলেছিলেন এবং সহায়তা জুগিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। যেসব বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আমরা হারিয়েছি, তাদের অধিকাংশই ছিলেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে খ্যাতিমান। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বাঙালির বিজয় অর্জনের ফলে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে এক স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। আমাদের জন্য তা মহত্তম অর্জন। কিন্তু বিজয়ের আনন্দ অনেকটাই বিষাদে পরিণত হয় লাখ লাখ সাধারণ মানুষ ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের কারণে। বুদ্ধিজীবীসহ ৩০ লাখ শহীদ ও অসংখ্য নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি প্রিয় স্বাধীন মাতৃভূমি।

প্রতিবারের মতো এবারও জাতি আত্মত্যাগের মহিমায় বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে। স্বস্তির বিষয়, দেরিতে হলেও যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের প্রায় সবারই বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দেয়া দণ্ডাদেশ কার্যকরও হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া শহীদ বুদ্ধিজীবীরা তাদের মেধা, সৃজনশীলতা, জ্ঞান ও দক্ষতা দ্বারা স্বাধীন বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারতেন। দেশের জন্য বড় ধরনের অবদান রাখতে পারতেন। কিন্তু ঘাতকদের নির্মমতায় তারা সেটি পারেননি। এটা নিঃসন্দেহে জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ তখনই সার্থক হবে, যখন আমরা তাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে পারব। দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি রইল আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ