শিরোনাম
The Surge of Bitcoin Online Casinos: A Guide to Depositing with Cryptocurrency সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জ্ঞাতার্থে অবগতি পত্র প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে পাইলটের মৃত্যু বাইডেনের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের হুমকি খুবই হতাশাজনক: ইসরাইল প্রথম ফ্লাইটে সৌদি আরব গেলেন ৪১০ জন হজযাত্রী ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১০৬৩৮ দেশবরেণ্য পরমাণু বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়ার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপজেলা ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে: সিইসি অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিএসএফ’র গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত গাজীপুরের তিন উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু সারাদেশে পরিবেশ রক্ষায় গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্টের রুল কেনিয়ায় বাঁধ ভেঙে ৪২ জন নিহত স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হাইকোর্টের নির্দেশ ৪ বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৩:৫১ অপরাহ্ন

দাঁতের চরম অযত্ন হয়েছে করোনায়

হেলথ ডেস্ক / ৩৩১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ২০ মার্চ, ২০২১

এরই মধ্যে আজ শনিবার (২০ মার্চ)পালিত হলো বিশ্ব মুখগহ্বর স্বাস্থ্য দিবস বা ওয়ার্ল্ড ওরাল হেলথ ডে ২০২১। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য,  ‘বি প্রাউড অব ইওর মাউথ’।

সম্প্রতি বিশ্ব মুখগহ্বর স্বাস্থ্য দিবস বা ওয়ার্ল্ড ওরাল হেলথ ডে ২০২১ উপলক্ষ্যে পেপসোডেন্ট এর পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে ৩১ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক দিনে দু’বার দাঁত ব্রাশ করেননি। ৩৩ শতাংশ বাবা-মা দিনে দু’বার দাঁত ব্রাশ করেননি। ৩৫ শতাংশ শিশুরা দিনে দু’বার দাঁত ব্রাশ করেনি।

আর প্রাপ্তবয়স্করা স্বীকার করেছেন করোনাকালে ঘরে থেকে থেকে তাদের অভ্যাস বাজে হয়েছে ও ও শিশুদের দৈনন্দিন রুটিনে শিথিলতা চলে এসেছে। দাঁত ব্রাশ করার বিষয়ে অবজ্ঞার কথা তারা স্বীকার করেছেন।

প্রতি ২ জনের মধ্যে ১ জন (৫৪ শতাংশ) প্রাপ্তবয়স্ক বলেছেন এমনও দিন গিয়েছে তারা একবারও দাঁত ব্রাশ করেননি। প্রতি ২ জনের মধ্যে ১ জন (৫৪ শতাংশ) অলসতার কারণে তারা তাদের দাঁত ব্রাশ করেননি। চাকরিজীবী অর্ধেকের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক (৫৯ শতাংশ) বলেছেন দাঁত ব্রাশ না করেই তারা কাজে গিয়েছেন।

এছাড়া অধিকাংশ বাবা-মা স্বীকার করেছেন তারা শিশুদের মুখগহ্বরের যত্নের ব্যাপারেও উদাসীন হয়েছেন। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জন (৬৯ শতাংশ) বাবা-মা বলেছেন ঘুমানোর আগে তারা সন্তানকে মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতে দিয়েছেন।

মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য নিয়ে সমস্যা সত্ত্বেও বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে জরিপে তথ্য উঠে এসেছে। এক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যা গুরুত্ব পাচ্ছে। প্রতি ১০ জনের ৬ জন (৬৪ শতাংশ) জানিয়েছেন মহামারির শুরুর পর থেকে তারা মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যের সমস্যায় পড়েছেন।

জরিপে অংশগ্রহণকারীরা করোনাকালে সবচেয়ে বেশি যে ৫টি মুখের সমস্যার মধ্য দিয়ে  গিয়েছেন, দাঁত, মাড়ি, মুখে ব্যথার কথা জানিয়েছেন ৩০ শতাংশ, দাঁত ও মাড়িতে রক্তপাতের কথা জানিয়েছেন ২৭ শতাংশ, মুখে ব্যথার কারণে খেতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন ২৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারী, দাঁতের ব্যথার কারণে মাথা ব্যথার কথা জানিয়েছেন ২৭ শতাংশ এবং চোয়াল ব্যথার কথা জানিয়েছেন ২৫ শতাংশ।

প্রতি দুজনের মধ্যে একজন (৫০ শতাংশ) প্রাপ্তবয়স্ককে মহামারির সময় দাঁত-ব্যথার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তাদের মধ্যে, ২১ শতাংশ মৃদু দাঁত-ব্যথা উপলব্ধি করেছেন। ২২ শতাংশের দাঁত ব্যথা ছিল।

 ৮ শতাংশকে প্রবল দাঁত ব্যথার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।

প্রাপ্তবয়স্করা অন্যান্য স্বাস্থ্য পরিচর্যার চেয়ে মুখগহ্বর স্বাস্থ্যের প্রতি কম মনোযোগী ছিলেন, অন্যান্য শারীরিক সমস্যার যত্ন নিয়েছেন ৭২ শতাংশ। মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতার প্রতি যত্নশীল ছিলেন ৭৯ শতাংশ। ওরাল বা মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল ছিলেন ৬২ শতাংশ।

৮টি দেশের (ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, ফ্রান্স, বাংলাদেশ, মিশর, ঘানা, ভারত) ৬ হাজার ৭০০ ব্যাক্তি ৩০ মিনিটব্যাপী হওয়া এই অনলাইন জরিপে অংশ নেন।

একইসঙ্গে আরও একটি কোয়ালিটিটিভ রিসার্চ বা গুণগত গবেষণা চালানো হয় দাঁতের চিকিৎসকদের নিয়ে। চিকিৎসকরা জানান করোনায় তাদের চিকিৎসাসেবা ও রোগীদের দাঁতের যত্নে করোনা কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে।

এমনকি মারাত্মক ব্যথা অনুভবের পরও অনেকে ডেন্টিস্টের কাছে যাননি। প্রতি ৫ জনের ২জন (৪২ শতাংশ) বলেছেন মহামারির সময় তারা দাঁতের চিকিৎসকের কাছে গিয়েছেন। দাঁতের ব্যথা অনুভব করেছেন এমন  প্রতি ২ জনের ১ জন (৫১ শতাংশ) ডেন্টিস্টের কাছে গিয়েছিলেন।

গবেষণায় আরো দেখা যায় ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য এখন সবাই প্রস্তুত। এখনই মুখগহ্বরের যত্ন নেয়ার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। জরিপে অংশ নেয়া ৬৬ শতাংশ বলেছেন পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ-খাওয়াতে তাদের নতুন অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। জরিপে অংশ নেয়া ৫২ শতাংশ বলেছেন অবসর সময় কাটানোর মতো বিষয়ে করোনার ইতিবাচক প্রভাব ছিল।

পেপসোডেন্ট এর এই জরিপে আরো দেখা যায়, বাবা-মা যদি দিনে দু’বার ব্রাশ না করে সন্তানের ব্রাশ না করার হার ৭ গুণ বেড়ে যায়। যখন বাবা-মা দিনে দু’বার ব্রাশ করে, সন্তানের ব্রাশ করা এড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা মাত্র ১১ শতাংশ। যখন বাবা-মা ব্রাশ করা এড়িয়ে যায়, সন্তানের ব্রাশ করা এড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ৭৭ শতাংশ।

জরিপে ইতিবাচক বিষয় হিসেবে দেখা যায়, প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জন (৬৮ শতাংশ) জানিয়েছেন করোনায় তারা স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও সচেতন হয়েছেন। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জন (৬৯ শতাংশ) জানিয়েছেন মহামারির পর থেকে মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতি ১০ জনের ৬ জন (৬২ শতাংশ) বলেছেন করোনা মহামারি বুঝিয়ে দিয়েছে তারা নিজের স্বাস্থ্যকে দায়সারাভাবে নিয়েছিলেন। প্রায় ১০ জনের ৬ জন (৫৮ শতাংশ) বলেছেন করোনাকালে বুঝতে পেরেছেন তারা স্বাস্থ্যের প্রতি পর্যাপ্ত যত্ন নিচ্ছেন না।

দেখা গিয়েছে, হাতধোয়ার মতো ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা বেড়েছে, মহামারির পর থেকে, অধিকাংশই হাত ধোয়ার ব্যাপারে সচেতন (৭১ শতাংশ), দাঁত ব্রাশ করার চেয়ে (৪৫ শতাংশ)। মহামারির পর থেকে অধিকাংশই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করছেন (৬৮ শতাংশ), মাউথওয়াশ (৪০ শতাংশ) ব্যবহারে চেয়ে।

ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড এর বিউটি অ্যান্ড পার্সোনাল কেয়ার এর মার্কেটিং ডিরেক্টর আফজাল হাসান খান বলেন, মহামারি বা অন্য সাধারণ সময়েও সবাইকে দাঁত ও মুখের যত্ন নিতে হবে। এখানে সচেতনতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে সন্তানদের জন্য বাবা-মায়েদের সচেতনতা। যখন ছোটবেলা থেকেই ভালো অভ্যাস গড়ে উঠে, শিশুরা বড় হলেও তাদের মধ্যে সে প্রভাব থেকে যায়।”

 তিনি আরো বলেন, শিশুদের মাঝে ওরাল স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে বাবা-মা ও শিক্ষকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দাঁতের যত্ন নিয়ে শিশুদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে ইউনিলিভারও কাজ করে। এ কারণেই আমরা স্কুলে স্কুলে যাই অথবা দাঁতের চিকিৎসকদের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করি।

বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটি’র সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবির বুলবুল বলেন, করোনা মহামারির সময়ে দেশের মানুষের মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে।  বিশেষ করে, দুই বেলা দাঁত ব্রাশ করা, ব্রাশ ও মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিপালিত হচ্ছে না। অর্থাৎ, দাঁত ও মুখগহ্বরের সাধারণ যত্ন উপেক্ষিত হয়েছে। মহামারির পুরোটা সময় চিকিৎসা না-করায় দেশের মানুষের দাঁত ও মুখের রোগ বেড়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ