চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে গরু চুরির হিড়িক পড়েছে। কখন গোয়াল থেকে গরু চুরি হয় এই আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন এলাকার মানুষ। প্রতিরাতেই কোনো না কোনো এলাকায় হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ চোরের দল। গত কয়েক মাসে এ উপজেলায় প্রায় অর্ধশতাধিক গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ রবিবার রাতেও উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের ভাওয়াল গ্রামের ইটভাটা মালিক আব্দুল হান্নানের গোয়াল ঘর থেকে ৩টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়াও গত সপ্তাহে উপজেলার বালিথুবা পুর্ব ইউনিয়নের বালীথুবা গ্রাম থেকে ৪টি গরু চুরি করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ চোরেরা। কয়েক সপ্তাহ আগে সুবিদপুর ইউনিয়নের চৌরাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাকের দুইটি যাবি একটি ষাঁড় ও দক্ষিণ বালীথুবা আব্দুল বেপারি বাড়ি লিটুর স্ত্রীর একটি গাভী একটি বাসের নিয়ে যায়। পুলিশের নজরদারির অভাব আর রাত্রিকালীন টহল না থাকার কারণে চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না বলে অনেকের অভিযোগ। সংঘবদ্ধ চোরের দল নানা কৌশলে একের পর এক চুরি করে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রায় প্রতি রাতেই গোয়াল ঘর থেকে চোরের দল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে দরিদ্র কৃষকের সহায় সম্বল। যাদের গরু আছে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ জমানো সঞ্চয়, ধার-দেনা কিংবা ঋণ নিয়ে গরু কিনে তা লালন পালন করে থাকেন। সংসারে একটু স্বচ্ছলতা আনতে তারা অনেক কষ্ট করে থাকেন। গরুর দুধ বিক্রি করে পরিবারের খরচের টাকা যোগান। কৃষি নির্ভর পরিবারগুলো গরু দিয়ে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে। আর গরু চোরেরা যখন এসব মূল্যবান গরু চুরি করে নিয়ে যায় তখন হতদরিদ্র এসব পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে পড়ে। রাতের বেলায় যেসব সড়কে আলো থাকে না কিংবা অনেকটা নির্জন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশি উন্নত বিশেষ করে সেসব এলাকায় চুরির ঘটনা বেশি ঘটছে।
ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক ব্যক্তি জানান, গরুর ঘর থেকে রশি কেটে অথবা খুলে গরু গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। তবে এসব ঘটনায় গরু চোরদের গ্রেফতার করতে না পারায় একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটছে। চুরি হওয়ার পেছনে এলাকার একটি কুচক্রী মহল ওতপ্রোতভাবে জড়িত। রাতে কোনো এক সময় তাদের সহযোগীদের সাথে যোগসাজশ রেখে চোরাই করা গরু গুলো এলাকা থেকে অন্যত্র নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা এগুলো জেলার বিভিন্ন নির্ধারিত গরুর হাটে তাড়াহুড়া করে বিক্রি করে ফেলে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা স্থানীয় জনপ্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।