চাঁদপুরে আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এবার বেশ ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন গরু খামারিরা। কিন্তু চলমান কঠোর লকডাউন ও করোনা সংক্রমণের হার প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি খামারিদের দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। এই সংকটময় মুহূর্তে লোকসান কাটিয়ে উঠতে অনলাইনে গরু বেচা-কেনার কার্যক্রম শুরু করেছেন খামারিরা।
ঈদে গরুর ভালো দাম পেতে প্রাকৃতিক উপায়ে দেশীয় পদ্ধতিতে চলছে গরু মোটাতাজাকরণ। গরুকে নিয়মিত খাওয়ানো হচ্ছে খৈল, ভুসি, কাঁচা ঘাস, ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম। ব্যস্ত সময় কাটছে গরুর খামারে কর্মরত শ্রমিকদের।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, এ বছর চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় ছোট বড় ৩ হাজার ২০০ খামারি ১ লাখ ১৭ হাজার গবাদিপশু মোটাতাজা করছেন। এর মধ্যে গরু রয়েছে প্রায় ৭৮ হাজার এবং ছাগল ও ভেড়া রয়েছে ৩৯ হাজার। জেলায় চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার পশুর।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে গরুর হাট বসানোর বিষয়ে অনুমতি দিচ্ছে না। এরপর যদি কোনো নির্দেশনা পাই, তখন আমরা হাট বসানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা করব। স্থানীয় খামারিরা অনলাইনের মাধ্যমে তাদের পশু বিক্রি করছে বিষয়টি আমাদের জন্য ইতিবাচক।
চাঁদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার সানজিদা শাহনাজ বলেন, আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আগামী ১৪ তারিখের পর বসবে গরুর হাট। এখন লকডাউন হওয়ায় গরুর হাট বসানো হচ্ছে না। তবে আমরা হাট বসানোর কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রেখে ইজারা প্রক্রিয়াসহ যাবতীয় কার্যক্রম এগিয়ে রেখেছি। কিন্তু সব নির্ভর করবে সরকারি পরবর্তী সিদ্ধান্তের উপর।
তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে অনলাইনে গরু কেনাবেচার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওখান থেকে কোরবানির জন্য যে কেউ নির্ধারিত মূল্যে গরু ক্রয় করতে পারবে। স্বাস্থ্যবিধি এবং সরকারি নির্দেশনা মানার ব্যাপারে আমরা তৎপর রয়েছি। গরুর হাট বসলেও সে তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। তবে সব কিছু পরবর্তী সরকারি নির্দেশনার ওপর নির্ভর করছে
চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের ব্রাহ্মান শাখুয়া এলাকার এইচবি অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. হারুনুর রশিদ বলেন, খামারে ২০টি গরু পালন করছি। অর্গানিক পদ্ধতিতে তাদের বড় করে তোলা হয়েছে। ঘাস, খড়, ভুসি খাওয়ানো হচ্ছে। লকডাউনের কারণে এখনো কোথাও হাট বসেনি। তাই ঈদ কেন্দ্র রেখে অনলাইনেই গরু বিক্রি শুরু করেছি।
শহরের মাদরাসা রোড এলাকার আরেক খামারি সিয়াম হোসেন বলেন, গত বছর করোনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবার অনলাইনে গরু বিক্রি শুরু করেছি। তবে গরুর যেই দাম চাচ্ছি, অনেক ক্রেতাই তার থেকে কম দাম বলছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে কোরবানির পশু মজুত রয়েছে। অবৈধভাবে বিদেশি পশু যেন দেশে ঢুকতে না পারে, সে ব্যাপারে সরকার পর্যবেক্ষণ করছে। তাছাড়া খামারিরা যেন কোনো নিষিদ্ধ ওষুধ ব্যবহার করতে না পারে, সে ব্যাপারে প্রাণিসম্পদ অফিস তৎপর রয়েছে।