শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন

পরিবেশ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে: তথ্যমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক / ২৩৩ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ৫ জুন, ২০২১

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ পরিবেশ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষকে ভালো অভ্যাসগুলো জানানো এবং শেখানো। সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানাই, আসুন, যারা পরিবেশ ধ্বংস করে, প্রকৃতির বিরুদ্ধে কাজ করে, প্রকৃতিকে ধ্বংস করে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াই।’

তথ্যমন্ত্রী আজ শনিবার বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক আবদুল আউয়াল সরকার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপমহাপরিচালক (বার্তা) অনুপ কুমার খাস্তগীর। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক নিতাই কুমার ভট্টাচার্য সভায় সভাপতিত্ব করেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মানুষের টিকে থাকার জন্য এই পৃথিবী দরকার, কিন্তু পৃথিবীর টিকে থাকার জন্য মানুষের দরকার নেই। পৃথিবীতে বহু প্রাণী এসেছে, বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কিন্তু পৃথিবী টিকে আছে। মানুষও যদি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে পৃথিবীর কিছু যায় আসে না। যেভাবে আমরা পরিবেশ ও প্রকৃতিকে ধ্বংস করছি, প্রকারান্তরে আমরা আমাদের অস্তিত্বই ধ্বংস করছি, এটিই হচ্ছে বাস্তব সত্য। সুতরাং আমাদের নিজের প্রয়োজনেই পরিবেশ ও প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরের ২ কোটি মানুষ এবং চট্টগ্রাম শহরের প্রায় ৮০ লাখ মানুষ যদি মনে করে, আমি যেখানে–সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলব, পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা সেটি পরিষ্কার করবে, তাহলে সেই শহর কখনো পরিষ্কার রাখা সম্ভব হবে না। সে জন্য পরিবেশবিজ্ঞানের একজন ছাত্র ও পরিবেশ কর্মী হিসেবে সবার প্রতি বিনীত নিবেদন জানাই, প্রত্যেকেই যেন তিনটি করে গাছ লাগাই। এটি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার স্লোগান। একই সঙ্গে নিজের প্রয়োজনে পরিবেশ-প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করি, তাহলেই মানুষ এই পৃথিবীতে টিকে থাকবে।’

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন। চট্টগ্রাম, ০৫ জুন

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন। চট্টগ্রাম, ০৫ জুন ছবি: সংগৃহীত

গত ১২ বছরে বৃক্ষে আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, যেখানে একসময় বনাঞ্চলের পরিমাণ ৮ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল, সেটি এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। রাস্তার ধারের বনায়ন নষ্ট হয় না, জনগণই পাহাড়া দেয়। কারণ এই সামাজিক বনায়নের মালিকানা রাস্তার পাশের মানুষের আছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে ৪৫০ কোটি বছর আগে। বিজ্ঞান বলছে, পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব দেখা দিয়েছে ২৭০ কোটি বছর আগে। পৃথিবীতে প্রথম দফায় প্রাণের আবির্ভাব হওয়ার পর কয়েক কোটি বছর প্রাণ টিকে ছিল। কিন্তু এরপর বেশির ভাগ প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যায়। এর মূল কারণ হচ্ছে, সে সময় যেসব প্রাণীর উদ্ভব ঘটেছিল, পরবর্তীকালে প্রকৃতিতে পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে সেসব প্রাণীর আর টিকে থাকা সম্ভব হয়নি।

এরপর দ্বিতীয় দফায় পৃথিবীতে আবার প্রাণের আবির্ভাব ঘটে প্রায় ৩০ কোটি বছর আগে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, তখনই পৃথিবীতে ডাইনোসরের আবির্ভাব ঘটে। পৃথিবীতে এত বড় আকৃতির প্রাণী কখনো ছিল না। আজ থেকে ৬৫০ কোটি বছর আগে ডাইনোসরসহ সে সময় যে প্রাণের আবির্ভাব ঘটেছিল, তার বেশির ভাগ প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যায়। এই বিলুপ্তিরও প্রধান কারণ হচ্ছে পরিবেশ ও প্রকৃতির পরিবর্তন। তিনি বলেন, তৃতীয় দফায় যেসব প্রাণের আবির্ভাব ঘটে পৃথিবীতে, তার মধ্যে একটি প্রাণী হচ্ছে মানুষ। পৃথিবীতে এখন নানা ধরনের প্রাণী আছে। আজকের পৃথিবীতে মানুষ মনে করছে, তারা এই পৃথিবীর অধিপতি। সে কারণে মানুষ পুরো প্রকৃতিকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করছে। নিজের প্রয়োজনে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করার কারণে মানুষ আজ অনুভব করছে, প্রকৃতি বৈরী হলে কী হয়!

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে বাতাস ছাড়া মানুষ টিকতে পারে না, সেই অক্সিজেনটুকুও আমরা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারছি না। অক্সিজেন গ্রহণের জন্য আমাদের যে শ্বাসতন্ত্র, সেটিকে আবরণ দিয়ে ঢেকে রাখতে হচ্ছে, এটি আমাদের কারণেই হয়েছে। আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে, কিন্তু এত উন্নতির পরও আমরা দেখলাম করোনার কাছে আমরা কী রকম অসহায়। এটির প্রধান কারণ হচ্ছে সবকিছুকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহারের মানুষের যে মনোবৃত্তি, অন্য প্রাণীর প্রয়োজন কোনো সময় মাথায় না রাখা, পরিবেশ ও প্রকৃতিকে ধ্বংস করা।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ