ওজন বৃদ্ধি বা স্থুলতা বর্তমান সময়ে অনেকেরই বিষণ্ণতার কারণ। শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে শরীরে অতিরিক্ত মেদ বা চর্বিজাতীয় পদার্থ জমা হয়ে শরীরের ওজন বেড়ে যায়। আর ওজন কমাতে অনেকেই না খেয়ে থাকতে চান। তবে ওজন কমাতে চাইলে সকালের নাস্তাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। মধ্যাহ্নভোজ বা রাতের খাবারের তুলনায় সকালের নাস্তা অনেকটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ সকালের খাবার না খেলে মেটাবলিজম কমে যায় এবং এতে ক্যালোরি বার্ণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। সকালের খাবার সঠিকভাবে খেলে ওজন সহজেই কমানো যায়। সকালের নাস্তায় যা খেলে আপনার ওজন দ্রুত কমবে তা এক নজরে দেখে নিন।
সকালের শুরুতেই দুই গ্লাস গরম পানি পান করুন। আপনি চাইলে শুধু পানিও খেতে পারেন আবার লেবু পানিও খেতে পারেন। পানি শরীর থেকে টক্সিন গুলো বের করে দেয়। এতে করে ত্বক ভালো থাকে। এছাড়া পানি হজম ব্যবস্থাকে উন্নতি করে এবং বিপাক ক্রিয়া ঠিক রাখে। দুইটাই ওজন কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ঘুম থেকে ওঠার এক ঘন্টার মধ্যে অবশ্যই সকালের নাস্তা খেতে হবে। গত রাতের খাবার যে খেয়েছেন তা থেকে উৎপন্ন শক্তি অনেক আগেই ক্ষয় হয়ে গেছে এতে করে মন মেজাজেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সুতরাং শক্তি পুনারায় গঠনের জন্য সকালের খাবার অনেক জরুরি।
সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় প্রোটিনসমৃদ্ধ সকালের নাস্তার গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে প্রোটিনে পূর্ণ সকালের নাস্তা কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে অতিরিক্ত খিদে পাওয়ার প্রবণতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। এবং তাদের ওজন বেড়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। প্রোটিন জাতীয় খাবার ব্রেন এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
ফাইবার সমৃদ্ধ শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে এবং ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। এজন্য সকালের নাস্তায় অবশ্যই সবজি ও ফলমূল রাখতে হবে।
আপনার খাবারে খুব বেশি মিষ্টি ও উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করবেন না। আপনার প্রতিদিনের ক্যালোরি গণনাটি তিনটি খাবার এবং দিনের দুটি স্ন্যাকসের মধ্যে ভাগ করা উচিত। আপনার সকালের খাবার আপনার প্রতিদিনের ক্যালোরি গ্রহণের মাত্র ২৫ থেকে ৩০ শাতংশ হওয়া উচিত।
সকালের পানীয়ে চিনি দেবেন না। তা সে দুধের তৈরি কোন রকম শেক হোক বা কোনও ফলের রস। চিনি ছাড়া ফল বা ফলের রস শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
অনেকেই হয়তো জানেন না যে, শস্যদানার মধ্যে বেশ অনেকটা চিনির মতোই কার্বোহাইড্রেড থাকে তাই সকালের নাস্তায় শস্যদানা রাখলে ওজন কমার বদলে আরও বেড়ে যেতে পারে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে শিশুদের ক্ষেত্রে কার্টুনের পাশাপাশি সকালে শস্য খাওয়ার অভ্যাস আরও বেশি করে তাদের অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।