জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘খুনি হাসিনার মতো অন্য কেউ ভুল পথে হাঁটলে তাদের পরিণতিও তার মতো হবে। গত ১৬ বছরে খুনি হাসিনা হাজার হাজার পরিবারকে উৎখাত করেছে। সে একদিনে খুনি হাসিনা হয়নি। যাকে টার্গেট করেছে তাকেই মেরেছে। শেখ হাসিনা যা করেছে তার ফলাফল চব্বিশের অভ্যুত্থান। আমরা কাউকে ছাড়ব না, তাই বুক টান করে প্রতিবাদ করতে হবে।’
শনিবার (১১ জানুয়ারি) ময়মনসিংহ নগরীর অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে ‘জুলাই বিপ্লবোত্তর আকাঙ্ক্ষা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে খুনি হাসিনার মাধ্যমে নানাভাবে অত্যাচারিত হয়েছে এ দেশের মানুষ। তার ক্ষমতার পিপাসার কাছে জিম্মি ছিল মানুষ, গোপালগঞ্জের কাছেও জিম্মি হয়ে ছিল এ দেশের মানুষ। তাই প্রত্যেক মানুষ জীবনের মায়া ত্যাগ করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। খুনি হাসিনার দোসররা মাদ্রাসার ছাত্র দেখলে টার্গেট করে গুলি করত। তাই ছাত্ররা পাঞ্জাবি-পায়জামা না পরে টি-শার্ট গায়ে দিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখে। শুধু মাদ্রাসা নয়, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও এমন হয়েছে।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের জায়গা থেকে যখন শহিদদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলি, তখন তারা চায় খুনি হাসিনার দোসরদের বিচার। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ এখনো দেশ স্বৈরাচারের দোসরমুক্ত হয়নি। দেশের অনেক রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দোসরদের মদদ দিচ্ছে। আমরা সংস্কারের কথা বলছি। কিন্তু যারা এমন করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কেন কথা বলছি না। তাদের বিরুদ্ধে কথা না বলতে পারলে অভ্যুত্থানের সফলতা আসবে না। আজকে চাঁদাবাজি হচ্ছে, সিন্ডিকেট হচ্ছে, কারা করছে তাদের কথা কেন বলতে পারছি না। প্রত্যেকটা বাজারে চাঁদাবাজির জন্য পণ্যের দাম বাড়ছে। এতে সরকারকে দোষারোপ করে কোনো লাভ নেই।’
অনুষ্ঠানে বিপ্লবের চেতনা সরকার ও বিএনপি ধারণ করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘একটা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন দেশ পেয়েছি। সেই বিপ্লবের চেতনা সরকার ও বিএনপি ধারণ করতে পারেনি। সরকারের উচিত ছিল ক্ষমতায় বসার পর দেশে শুদ্ধি একটা অভিযান চালানো। তা না করে হঠাৎ পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে দিয়েছে। তা বাড়ানোর আগে পরামর্শের প্রয়োজন ছিল।’
আস-সিরাজ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুফতি মুহিববুল্লাহর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লুৎফর রহমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আশরাফ মাহাদী, ড. আতিক মুজাহিদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। পরে শহিদ ১৫ জনের পরিবারের সদস্যদের মাঝে অনুদানের অর্থ বিতরণ করেন অতিথিরা।