চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে পৌর এলাকায় অনুমোদন বিহীন চলছে তিনটি এলপিজি সিএনজি গ্যাস ফিলিং ষ্টেশন। এগুলো হচ্ছে, বাসষ্ট্যান্ড, বড়ালী ও ভাঁটিয়ালপুর এলাকায়।
দীর্ঘদিন যাবত এ এলপিজি সিএনজি গ্যাস ফিলিং ষ্টেশনগুলো অনুমোদনবিহীন ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে চললেও প্রশাসন থেকে তেমন কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় এদের দৌঁরাত্ব বেড়েই চলছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।
প্রশাসনের নাকের ডগায় এ ষ্টেশনগুলো দির্ঘদিন অবাধে চললেও এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিন দিন নতুন করে এদের সংখ্যা বেড়ে চলছে। প্রতিলিটার গ্যাস সরকারী নিয়ম মোতাবেক ৪২ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও সবগুলোতে অতিরিক্ত হারে আদায় করা হচ্ছে। বড়ালী ফিলিং সেন্টারে ৫২টাকা লিটার পিছু নেওয়া হচ্ছে।
অপর দু‘টিতেও একই পরিস্থিতি চলছে। এদিকে বাজারে রান্নার এলপি গ্যাস সিলিন্ডার উপজেলার সকল বাজার ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে সব ধরনের দোকানে বিক্রি হচ্ছে। মুদি দোকান, প্লাস্টিক সামগ্রী, কসমেটিক্স, জুতার দোকান, ফার্নিচার সেলুন ও ফোন-ফ্যাক্সের দোকানেও বিক্রি হচ্ছে। অধিকাংশ দোকানীর এলপি গ্যাস বিক্রির অনুমোদন নেই। অনেক দোকানে পুরাতন সিলিন্ডারে এলপি গ্যাস বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি দৃশ্যমান নয়। উপজেলার অধিকাংশ দোকানে বিভিন্ন সাইজের এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য তালিকাও নেই। এসব মৌসুমি দোকানীদের এলপি গ্যাস ব্যবহারের নিয়ম কানুনও জানা নেই। সস্তায় নিম্নমানের রেগুলেটর, গ্যাস সরবরাহ পাইপ ও অনুমোদনহীন বিভিন্ন কোম্পানির ঝুঁকিপূর্ণ চুলা বিক্রির হিড়িক পড়েছে ফরিদগঞ্জে।
বিশেষ করে ফরিদগঞ্জে লাইনের গ্যাস না থাকায় বাসা-বাড়ি ও রেষ্টুরেন্টে এলপি গ্যাসের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে এবং দামও রাখা হচ্ছে ইচ্ছেমতো। এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম কানুন না জানায় দুর্ঘটনা ও অগ্নিকান্ডের ঘটনাও ঘটছে। প্রতিটি এলপিজি গ্যাস ফিলিং ষ্টেশনের জন্য ১৫ ধরণের অনুমোদন নেওয়ার বিধান রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য, সড়ক বিভাগের, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিদ্যুৎ বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, পৌরসভা, ইউএনও, এসিল্যান্ড অফিসের অনুমোদনসহ আরোও অনেকগুলো। উপজেলা সদরে রাজ এলপিজি ফিলিং এন্ড কনভার্সন সেন্টারে গিয়ে মালিকানার দাবীদার কাউকে পাওয়া না গেলেও কেয়ার টেকার (কর্মচারী) মোহাম্মদ দ্বীন ইসলাম ও সাইফুল ইসলামের সাথে কথা হলে তারা জানায়, এ ফিলিং ষ্টেশনটির মালিক চৌমুহনীর ফিরোজ আলম খোকন ও আবুল কালাম আযাদ। অনুমোদনের বিষয় জানতে চাইলে তারা জানান, কাগজপত্র মালিক পক্ষের নিকট রয়েছে।
মালিক পক্ষের সাথে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে জানান, কাগজপত্র রয়েছে, তবে সব ধরণের কাগজপত্র নেই। বাকীগুলো প্রক্রয়াধীন রয়েছে। ভাঁটিয়ালপুর জেকে এলপিজি ফিলিং এন্ড কনভার্সন সেন্টারে গিয়েও মালিক পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে মালিক হাসান ও জহিরের সাথে কথা হলে তারা জানান, আমাদের অনুমোদন রয়েছে। তবে একটি এ ধরণের সেন্টার চালাতে হলে ১৫ ধরণের অনুমোদন নিতে হয়। আমাদের অধিকাংশগুলো রয়েছে। বাকি গুলো আমারা অচিরেই নিয়ে নেবো।
বড়ালীতে নাম ছাড়াই এলপিজি ফিলিং এন্ড কনভার্সন সেন্টারে গিয়ে কথা হয় মালিক পক্ষের –জাকির হোসেনের সাথে, আমরা কাগজপত্র নেওয়ার পক্রিয়া করছি। রাজনৈতিক পরিচয় ও নেতার সাথে সখ্যতার কথাও জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী হরি জানান, যত্রতত্র এলপি ও এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধের ব্যাপারে শিগগিরই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া এলপিজি সিএনজি গ্যাস ফিলিং স্টেশনগুলোর অনুমোদন না থাকলে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খাঁন মজলিস জানান, অনুমোদনবিহীন এলপিজি গ্যাস বিক্রির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।