করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বে গতবছর ক্ষুধা ও অপুষ্টি নাটকীয়ভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
সংস্থাটি বলছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ছাপিয়ে নিরঙ্কুশ ও আনুপাতিক- উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষুধা বেড়েছে।
জাতিসংঘের তিন সংস্থার যৌথ এক প্রতিবেদন সোমবার প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই উঠে এসেছে এমন তথ্য।
রয়টার্স জানায়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) যৌথভাবে ‘বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির সার্বিক অবস্থা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদন বলা হয়, আগের পাঁচ বছর অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা প্রায় অপরিবর্তিত ছিলো। কিন্তু গত বছর তা বেড়েছে প্রায় ৭৬ কোটি ৮০ লাখ, যা গোটা বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। এছাড়া এ সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় প্রায় ১১ কোটি ৮০ লাখ বেশি।
জাতিসংঘের সংস্থা তিনটি বলছে, দুঃখজনকভাবে করোনাভাইরাস মহামারি খাদ্য পরিকল্পনাকে দুর্বল করে দিচ্ছে। যে কারণে হুমকির মুখে পড়ছে জীবন জীবিকা। এ হুমকি থেকে বাদ যায়নি বিশ্বের কোনো অঞ্চলই।
বর্তমান ধারা চলতে থকলে জাতিসংঘের ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে ক্ষুধামুক্ত করার যে লক্ষ্য, তা পূরণ করা সম্ভব হবে না এবং প্রায় ৬৬ কোটি মানুষ ক্ষুধাপীড়িত থেকে যাবে বলেও প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অপুষ্টির শিকার মানুষের অর্ধেকেরও বেশি (৪১ কোটি ৮ লাখ) এশিয়ায় এবং এক-তৃতীয়াংশের বেশি (২৮ কোটি ২০ লাখ) আফ্রিকায় বসবাস করে। আর অপেক্ষাকৃত একটি ছোট অংশ (৬ কোটি) লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে বসবাস করে। তবে ক্ষুধা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আফ্রিকায়, যেখানে মোট জনসংখ্যার প্রায় ২১ শতাংশই অপুষ্টির শিকার, যা অন্য যেকোনো অঞ্চলের তুলনায় দ্বিগুণ।
ধারণা করা হচ্ছে, এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে ক্ষুধামুক্ত করতে অন্তত আরও এক যুগ সময় লেগে যেতে পারে।