গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থানায় রজুকৃত সব মামলা নিষ্পত্তি করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে পুলিশ। জুন মাসেই এসব মামলা নিষ্পত্তি করা হয়। এর ফলে টুঙ্গিপাড়া থানায় মামলার সংখ্যা এখন শূন্যের কোটায় এসে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে অপরাধ দমনে পুলিশের এ নিরলস ভূমিকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পবিত্র পুণ্যভূমি টুঙ্গিপাড়াকে একটি শান্তির জনপদে পরিণত করেছে। কোথাও নেই কোনো বড় ধরনের মারামারি ও দাঙ্গা-হাঙ্গামার ঘটনা।
কোনো এলাকায় দাঙ্গা হাঙ্গামা বা বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা শোনামাত্রই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাসিমুল হকের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে ওই এলাকায় শান্তির পরিবেশ স্থাপন করছেন।
এলাকায় নেই কোনো চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও রাহাজানির ঘটনা। হ্রাস পেয়েছে টাউট বাটপাড়দের দৌরাত্ম্য। সর্বনাশা মাদক এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। অতিমারি করোনার বিস্তার রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও মানবিক আচরণের মাধ্যমে পুলিশ জনগণের পাশে সার্বক্ষণিক ভূমিকা পালন করছে।
টুঙ্গিপাড়ার গিমাডাঙ্গ গ্রামের উজির ফকির (৬২) বলেন, আগে থানায় যেতে ভয় পেতাম। কোনো কাজে কখনো থানায় গেলে কার সঙ্গে কথা বলব ঠিক বুঝে উঠতে পারতাম না। দীর্ঘক্ষণ থানায় বসে থাকতে হতো। টাকা ছাড়া সামান্য জিডি করা যেত না। এখন সেই অবস্থা নেই। অবস্থা সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশ এখন জনগণের বন্ধু। কোনো কাজে গেলে পুলিশ আমাদের সাথে খুব সুন্দর ব্যবহার করে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন মসজিদ গিয়ে এবং হাট-বাজারে মাইকিং করে ওসি সাহেব ঘোষণা দিয়েছেন- থানায় কোনো কাজে গিয়ে এখন থেকে কাউকে টাকা দেওয়া লাগবে না। এতে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা বেড়েছে।
টুঙ্গিপাড়ার আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বিএম এমদাদুর হক বলেন, টুঙ্গিপাড়া থানায় এখন কোনো মামলা নেই। এটা টুঙ্গিপাড়াবাসীর জন্য সুসংবাদ। পুলিশের সঠিক তৎপরতা ও কর্ম কৌশলের কারণে অপরাধীরা অপরাধ করতে সাহস পায় না। ফলে অপরাধের সংখ্যা কমে গেছে। জনগণ ও পুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করলে এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমি মনে করি।
টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি এএফএম নাসিম বলেন, থানায় যোগদানের পর থেকে তিনি দীর্ঘ দিনের মুলতবি মামলাসহ রুজুকৃত সব মামলা নিষ্পত্তি করতে সমর্থ হয়েছেন। টুঙ্গিপাড়া থানার বর্তমানে মামলার সংখ্যা শূন্যের কোটায়। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান এবং পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকার নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে আমরা এ অর্জন করেছি। আমরা সব কর্মকর্তা ও ফোর্স সমন্বিতভাবে আমাদের অর্জন অব্যাহত রাখতে নিরলসভাবে কাজ করছি।