রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে আরএমপির মতিহার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) উপাচার্য প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা।
সোমবার বিকালে নগরীর মতিহার থানায় তিনি এই জিডি করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান।
ওসি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। সেটিকে জিডি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
জিডিতে ভারপ্রাপ্ত ভিসি উল্লেখ করা হয়, গত বছর ১০ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক আদেশের মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় এবং সেই নির্দেশ আমলে নিয়ে তৎকালীন উপাচার্য সকল নিয়োগ স্থগিত রাখেন। কিন্তু তার মেয়াদের শেষ দিন চলতি বছরের ৬ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে নিজ ক্ষমতাবলে ১৪১ জনকে অ্যাডহকে নিয়োগ দেন।
নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগে ৯ জন শিক্ষক আছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগে ১৯৭৩ সালের এ্যাক্ট সেকশন ২৯, ধারা সি-৪ (৩) ভঙ্গ করে এ শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। গঠিত তদন্ত কমিটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নানা তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেন।
জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তরা তখন থেকে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে যোগদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তথা আমার ওপর বারবার চাপ বৃদ্ধি করতে থাকে। গত ১৯ জুন সকাল সাড়ে ৯টায় আমার বাসার গেটের সামনে ৫০-৬০জন অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত তুমুল হৈ হট্টগোল করতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে আমার স্ত্রী-কন্যারা চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বাসার কম্পাউন্ডের মধ্যে তারা প্রায় দুই ঘণ্টা অরাজক পরিস্থিতি করতে থাকে।
বিশৃঙ্খলকারীদের অন্যতম হল ফিরোজ মাহমুদ, মতিউর রহমান মর্তুজা প্রমুখ। শুধু তাই নয়, গত ২২ জুন সন্ধ্যা ৬টায় আমার বাসভবনের সামনে কয়েকজন এসে মহড়া প্রদর্শন করে তাদের অন্যতম ছিলেন ইন্দ্রনীল মিশ্র এবং শাহরিয়ার মাহবুব।
থানায় দেওয়া জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৯ জুন ফাইন্যান্স কমিটির সভা ও ২২ জুন সিন্ডিকেট সভাও তাদের বাধার কারণে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি সভা না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শৃঙ্খলা বজার রাখা স্বার্থে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন রক্ষার্থে বিষয়টি মতিহার থানায় সাধারণ ডায়েরি হিসেবে অন্তর্ভূক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য।