করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় যশোরে চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। বুধবার থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত প্রশাসন আরও কঠোর অবস্থানে থাকবে বলে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান এই সাত দিন সর্বাত্মক বিধিনিষেধ প্রতিপালনের জন্য নতুন করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- গত ৯ জুন থেকে যশোর পৌর এলাকা ও নওয়াপাড়া পৌরসভা এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রশাসন। এর পরে যশোর পৌরসভার লাগুয়া উপশহর, নওয়াপাড়া, আরবপুর ও চাঁচড়া ইউনিয়ন, ঝিকরগাছা সদর, বেনাপোল পৌরসভা, কেশবপুর পৌরসভায় এই কঠোর বিধিনিষেধে জারি করে। তাতেও জেলায় করোনা সংক্রমণের হার লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় যশোরে ৩০ জুন পর্যন্ত চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। এবারে সাত দিন সর্বাত্মক বিধিনিষেধের মধ্যে কাঁচাবাজার, মাছ বাজার, ফুল ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
একই সঙ্গে সব ধরনের দোকানপাট, শপিং মল, হোটেল, রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকান, বিপণিবিতান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ওষুধের দোকান সার্বক্ষণিক খোলা রাখা যাবে। এছাড়া জেলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটে বাস চলাচল, গণপরিবহন ও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে সিএনজি, রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, থ্রি-হুইলারসহ সকল যান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে রোগী ও জরুরি পরিবহন সেবা চালু থাকবে।
মসজিদে প্রতি নামাজের ওয়াক্তে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমসহ ৫ জন ও জুমার নামাজে ২০ জন মুসল্লির বেশি অংশ নিতে পারবেন না। এছাড়া মাস্ক পরিধান ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞাসহ সকল নির্দেশনা বলবত থাকবে।
যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, যশোরে ১৫ দিনের বিধিনিষেধ কার্যকর করেও করোনা সংক্রমণের গতি কমানো যায়নি। এ কারণে আরও সাত দিন বাড়িয়ে এবার সর্বাত্মক বিধিনিষেধ প্রতিপালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৩০ জুন পর্যন্ত আরও কঠোর অবস্থানে থাকবে প্রশাসন।
এদিকে যশোরে প্রতিদিনই করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালে করোনা ইউনিট ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে কোনো শয্যা খালি নেই। এমনকি মেঝেতেও কোনো জায়গা নেই। যশোর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ হাসপাতালের রেড ও ইয়েলো জোন মিলিয়ে শয্যা রয়েছে ১০৭টি। সেখানে রোগী ভর্তি আছেন ১৩৮ জন।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আরিফ আহমেদ বলেন, হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত ও করোনার উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর চাপ সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। রোগীর এত চাপ যে শয্যা দেওয়া যাচ্ছে না। এমনকি ওয়ার্ডের মেঝেতেও জায়গা নেই।