ঔষধি গুণে ভরপুর বিদেশী এক ফলের নাম ড্রাগন ফল। ক্যান্সার থেকে শুরু করে ডায়বেটিসসহ নানা রোগের মহাঔষধ এই ড্রাগন ফল। এ ফল দেখতে যেমন লোভনীয় খেতেও তেমন সুস্বাদু। ঔষধি গুণে গুণান্বিত, রসালো এই ড্রাগন ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে লাভবান হয়েছেন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার নাছির উদ্দীন সরকার । তিনি একজন শিল্পপতি ও সূফী সাধক। ড্রগন ফলের গুনাাগুন দেখে ২ একর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের সাদুল্লাপুর গ্রামের নাছির উদ্দীন সরকারের উদ্যোগে তৈরি করেছেন ভিয়েতনামের ড্রাগন ফলের বাগান। দীর্ঘদিনের ইচ্ছা শক্তি থেকেই তিনি প্রায় দেড় বছর আগে ২০০ শতাংশ জমির উপর এই ফলের বাগান তৈরি করেন। তার বাগানে সারি সারি ড্রাগন ফলের গাছে শোভা পাচ্ছে বিদেশী এই ফল। ১ হাজার খুটির মধ্যে রয়েছে ৫ হাজার গাছ।
নাছির উদ্দীন সরকার বলেন, এটি অত্যন্ত লাভজনক একটি ভেষজ ফল। এই ফল এখন অত্যন্ত লাভজনক ফসলে পরিণত হয়েছে। আমার এলাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন লোকজন আসে ড্রাগন ফলের বাগান দেখতে।
ড্রাগন ফলের গাছ মূলত কাণ্ড থেকে হয়। এই ফল চাষ করার জন্য অতিরিক্ত কোন রাসায়নিক সার বা কীটনাশকের কোন প্রয়োজন হয় না। শুধু মাত্র জৈব সারই যথেষ্ট। গাছ লাগানোর প্রায় ছয় ১ বছর পর থেকে ফল আসতে শুরু করে এবং ফলের বয়স ২৮-৩০ দিনের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয়। আমি দেড় বছর আগে চার লাগিয়েছি। এখন ফল ধরে পেকে গেছে। বিক্রিও শুর হয়েছে। ঢাকা কাওরান বাজারে পাইকারি ৩৫০-৪০০ টাকা কেজি বিক্রি করি। তাছাড়া এলাকার লোকজনও কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকার মত। বিক্রি হয়েছে ১ লাখ টাকার মতো। এবছরই ১৫ লাখ টাকা বিক্রির আশা আছে। গাছের কান্ড থেকে কেটে নতুন উৎপাদ করে বিক্রি করা হবে এবং গাছগুলো থেকে প্রায় ২০ বছর ফল উতপাদন করা যায়। ফলে কয়েক কোটি টাকা লাভবান করা সম্ভব হবে।
বর্তমানে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় এ ফল বেশ জনপ্রিয় খাবার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। বিদেশি ফলের চাষ করে সফলতা দেখিয়েছেন তিনি। এই ড্রাগন চাষেই নিজে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হপয়ার পাশাপাশি নিজের উপজেলায় ড্রাগন চাষের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে অনন্য অবদান রাখতে চাই ।
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, “অন্য ফসলের তুলনায় ড্রাগন চাষ লাভজনক। চারা লাগানোর এক বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে। নাছির উদ্দীন সরকারের বাগানে ১৪ মাসে ফল এসেছে । তিনি এখানে প্রথম এই ড্রাগন চাষ শুরু করেন। তার দেখাদেখি এখন অনেকেই ড্রাগন চাষে আগ্রহী হবেন। তাছাড়া “পুষ্টিগুণ, আকার-আকৃতি ও দামের কারণে বাজারে এই ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ক্যাকটাস জাতীয় গাছ হওয়ায় রোগ বালাইও কম। তাই চাষিরা সহজে এই ফল চাষ করতে পারে।