চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় দায়সারা ভাবে অনুষ্ঠিত প্রাণিসম্পদ মেলায় অংশ নেয়া উটপাখি ও ঘোড়ার মালিকরা তাদের পুরুষ্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন। উক্ত মেলা অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক ভাবে পুরুষ্কার না দিয়ে যথাযথ ভাবে সম্মান দেয়া ছাড়াই দায়সারা ভাবে গোপনে পুরুষ্কার দেয়ার বিষয়টি জেনে তারা হতাশ হয়ে উক্ত পুরুষ্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মূলত মেলার নামে বরাদ্দ হওয়া টাকার অধিকাংশ টাকা আত্বসাতের পায়তারা হিসেবেই দায়সারা আয়োজনে প্রাণিসম্পদ মেলার কার্যক্রম শেষ করেছে অনেকেই মনে করছেন।
এদিকে একটি সূত্র জানায়, ফরিদগঞ্জে এই প্রথম প্রাণিসম্পদ মেলাটি সফল করার জন্য মেলার খরচ বাবৎ সরকারি ভাবে ২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতার একাউন্টে পাঠানো হয়েছে। সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক মেলায় ৫০টি ষ্টল,প্রতিটি প্যাকেটে ২শ টাকা মূল্যের মোট ৩০০ জনের জন্য ৩শ খাবার প্যাকেট করার কথা থাকলে ষ্টল করা হয়েছে ৩০টি ,খাবার প্যাকেট করা হয়েছে মাত্র দেড়শ প্যাকেট। মেলার পেন্ডেলের খরচ সরকারী ভাবে নির্ধারন করা হয়েছে ৫৯ হাজার টাকা। মেলায় ছিলনা কোন মাইকিং কিংবা প্রচারণা।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জ্যোতিময় বড়ুয়া তার ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে স্বেচ্ছা চারিতা ভাবেই দায়সারা ভাবে মেলাটি শেষ করে সরকারি প্রায় আড়াই লাখ টাকার মধ্যে দেড়লাখ টাকা আত্বসাৎ করার আশায়ই মূলত দায়সারা ভাবে মেলাটি সম্পন্ন করেছে।
যে কারণে মেলা বাবৎ সরকারি বরাদ্দ কতো এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা জ্যোতিময় বড়ুয়া বিভিন্ন জনকে একেক সময় একেক রকম বিভ্রান্তি মূলক মিথ্যা তথ্য দিয়ে অনেকইে বিভান্ত করার অপচেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে,দায়সারা ভাবে অনুষ্ঠিত মেলায় অংশ গ্রহনকরা ৩০টি ষ্টলের মধ্যে ১৪ জনের মধ্যে ১২ জনকে পরদিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অফিসে পুরুষ্কারের বিভিন্ন অংশে টাকার চেক দেয়া হয়েছে। তবে মেলার প্রধান আকর্ষন হিসেবে ২টি উট পাখির মালিক আরিফ হোসেন জহির (৫ম) ও ঘোড়ার মালিক ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান হাজী মোজাম্মেল (৬ষ্ঠ) স্থান অধিকারী প্রাণিসম্পদ অফিসের পুরুষ্কার প্রত্যাক্ষান করেছেন। তবে ওই মেলায় কয়টি তোতাপুরি ছাগল এনে প্রথম হয়েছে বিশেরবন্ধ গ্রামের নুরুল আমিন কালুকে। তবে পুরুষ্কার হিসেবে ১৫শ টাকা থেকে ৫/ ৬ হাজার টাকার চেক দেয়া হলেও কাউকে পুরুষ্কারের সনদ পত্র না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ।
পুরুষ্কার প্রত্যাখ্যান করা দুটি উটপাখির মালিক আরিফ হোসেন ওরফে জহির ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মেলাটি সফল করার জন্য সরকার ২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা বরাদ্দ করার তথ্য প্রমাণ রয়েছে। অথচ ফরিদগঞ্জের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিজের স্বার্থসিদ্ধির আশায় দায়সারা ভাবে মেলাটি শেষ করার পরদিন আমাদেরকে অনানুষ্ঠানিক ভাবে পুরুষ্কার দেয়ায় বিষয়টি খামারীদের অপমান করা হয়েছে । যে কারণে আমি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান উক্ত পুরুষ্কার প্রত্যাখ্যান করেছি।
মেলায় অংশ নিয়ে প্রথম হওয়া নুরুল আমিন বলেন, আমাদের অনানুষ্ঠানিক ভাবে টাকার চেক না দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে সনদ পত্র দিলে খুশী হতাশ। কারন পুরুষ্কারের টাকার চেয়ে সনদ পত্রের মূল্যোটাই বেশী বলে আমি মনে করি।
প্রাণিসম্পদ অফিসের এক কর্মচারী বাবু সংকর বলেন,মেলা বিষয়ে তিনি কোন কিছুই জানেন না। সব কিছুই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিজেই তদারকি করছেন।
তবে প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তা জ্যোতিময় ভৌমিক সোমবার তার দুপুরে তার কার্যালয়ে সরকারী অর্থের অপচয় নাকি আত্বসাতের চেষ্টা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, মেলার খরচের সরকারী বরাদ্দের টাকা কোথায় কি কি বাবৎ খরচ করা হয়েছে এ বিষয়ে আমি কাউকে জানাতে বাধ্য নই। যা খরচ হচ্ছে সব ব্যাংকের মাধ্যমেই হচ্ছে বলে তিনি তড়িঘড়ি নিজের ব্যস্ততা দেখিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যান।
তবে এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ বখতিয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রাণি সম্পদ মেলার খরচ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের সরকারি ওয়েবসাইটে সব তথ্য দেয়া আছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চাঁদপুরের অন্যান্য উপজেলায় খুব সুন্দর আয়োজনে অনুষ্ঠিত মেলা সফল ও সার্থক হলেও ফরিদগঞ্জে অনুষ্ঠিত মেলার কার্যক্রম নিয়ে হতাশ হয়েছি।