তিনি বলেন, বৃষ্টির সময় অনেকক্ষণ ধরে যানবাহন আটকে থাকে রাস্তায় পানি জমে থাকার কারণে। সেগুলো দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। শুস্ক মৌসুমেও বিভিন্নস্থানে পৌরসভার সুয়্যারেজ লাইন লিকেজ হয়ে রাস্তায় পানি উপচে ওঠে। ওই সময় যেন দ্রুত এগুলো অপসারণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা যায়, সে জন্য ট্রাফিক পুলিশের হাতে প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট ও লজিস্টিক সাপোর্ট থাকতে হবে।
স্নিগ্ধা বলেন, শহরে যানজট হলেই দায়ী করা হয় ট্রাফিক পুলিশকে। কোন ব্যক্তি বা সংস্থার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়েছে সেটা শহরবাসী জানতে চান না। সেজন্য যত সমস্যাই থাকুক, যানজট নিরসন করতে হয় ট্রাফিক পুলিশকেই। অথচ যানজটের কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভাঙারাস্তা, তাতে পানি জমে যাওয়া, ড্রাইভারদের আইন অমান্য করার প্রবণতা ও অবৈধ পার্কিং।
তিনি বলেন, জরুরি সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয় করে সমস্যা নিরসন করতে গেলে অনেক জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। জরুরি সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে কথা বলেছি। তাই অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর দিকে না তাকিয়ে যানজট । নিজ এলাকার বাইরে গিয়েও তিনি অংশ নেন রাস্তা মেরামতসহ যানজট নিরসনে ।
সদর সার্কেল জানান, নিত্য যানজটে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরাও অতিষ্ঠ। যে কারণে আমার যত উদ্যোগ। । যেসব এলাকার বাসিন্দা নিজেদের পুরানো ভবন ভাঙেন, তাদের কাছ থেকে রাবিশ সংগ্রহ করে রাস্তায় ফেলার ব্যবস্থা করেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের চলাচলের সুবিধার্থেই ট্রাক ও লেবার দিয়ে ট্রাফিক পুলিশকে এ কাজে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করে থাকেন।
এব্যপারে স্নিগ্ধা সরকার আরও জানান , শহরে যানজটের অন্যতম একটি কারণ যানবাহন চালকদের বেপরোয়া মনোভাব। রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নামার পর তাদের মধ্যে আইন অমান্য করার প্রতিযোগিতা চলে। নিজেদের অপরাধকে অপরাধই মনে করেন না তারা। খেয়াল খুশিমতো গাড়ি চালানোর কারণেই যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনাও বেড়ে যায়। এর কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন, ট্রাফিক পুলিশের যেসব আইন ও বিধি-বিধানে শাস্তি ও জরিমানার কথা বলা হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই গাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এজন্য চালকরা জেনেশুনেই অপরাধ করেন ও করতে পছন্দ করেন। কিভাবে অপরাধ করা যায়, সেই প্রতিযোগিতা চলে। তাদের খেয়াল খুশিমতো গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হলে এক্ষেত্রে চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান করতে হবে। সেটা আর্থিক কিংবা লাইসেন্স জব্দ করে নির্ধারিত সময়ের জন্য প্রশিক্ষণে যেতে বাধ্য করতে হবে। তাহলে যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে যাবে। পুলিশকেও একটি সেবামূলক সংস্থা মনে করেন তিনি। তার মতে, দেশের সবচেয়ে বেশি জনসম্পৃক্ত বাহিনী হচ্ছে এই পুলিশ।
তিনি বলেন, অভিযোগের শেষ নেই পুলিশের বিরুদ্ধে। ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতেই পারে। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকেই মানুষ সবচেয়ে বেশি সেবা পেয়ে থাকেন বলে মনে করেন তিনি। তবে, আমি আমার ট্রাফিক জোনকে একটি মডেল জোনে পরিণত করে যেতে চাই। এ জন্য সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছেন তিনি।
এদিকে জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটির সভায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মাজেদুর রহমান খান বলেছেন, জনগণদের যানবাহনের ভিড় থেকে পরিত্রান দিতে নিজ সংস্থাকে নিজ নিজ অবস্থানথেকে এগিয়ে আসতে হবে জেলা শহরের বিভিন্ন জায়গাতে অবৈধ যানবাহন ভিড় জমিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। অযথা সিএনজি, অটোরিকশাগুলো যখন-তখন যেখানে-সেখানে রেখে ভিড় সৃষ্টি করছে তার দিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে। জনগন কে যানযট থেকে পরিত্রাণ দিতে নিজ নিজ সংস্থার লোকবল বাড়াতে হবে। আর এই ভিড় এড়াতে সবাইক৷ এগিয়ে আসতে হবে। অবৈধ যানবাহনের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। শুধু শহরেই নয় প্রতিটি উপজেলার বর্ডার লাইনেও ইউএনও সহ সংশ্লিষ্ট সবাই উপজেলার বর্ডার লাইনে থাকতে হব, যেন অবৈধ যানবাহন প্রবেশ করতে না পারে। মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।