তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কোনোভাবেই কোনো ইস্যুতে বঙ্গবন্ধুর অবমাননা সহ্য করা হবে না। একটি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আজকে সমাজে অস্থিরতা তৈরির অপচেষ্টা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
শনিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও সাংবাদিকতাবিষয়ক চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবকে বই বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মুজিববর্ষ আমরা যেভাবে পালন করতে চেয়েছিলাম, করোনার কারণে সেভাবে পালন করতে পারছি না। মুজিব বর্ষের শেষের দিকে এসে নানাভাবে নানা প্রসঙ্গ টেনে এনে বিতর্ক তৈরি করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। একটি অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আজকে সমাজে অস্থিরতা তৈরি করার অপচেষ্টা হচ্ছে। আমাদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কোনোভাবেই কোনো ইস্যুতে বঙ্গবন্ধুর অবমাননা সহ্য করা হবে না।’
নানা ইস্যু তৈরি করে যারা বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা ও সমাজে হানাহানি তৈরি করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকেরা দেশের মানুষকে পথ দেখান। আমাদের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনে যেমন সাংবাদিকদের অনন্য ভূমিকা ছিল, ঠিক একই সঙ্গে স্বাধীনতাসংগ্রামেও সাংবাদিকদের অনবদ্য ভূমিকা ছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতার জন্য সাংবাদিকদের লেখনী, পত্রিকার সংবাদ মানুষের মনন তৈরি করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’
মন্ত্রী বলেন, যারা সমাজকে পিছিয়ে দিতে চায়, যারা মধ্যযুগের সমাজব্যবস্থা কায়েম করতে চায়, তাদের যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাদের বিরুদ্ধেও আজ কলম নিয়ে সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে।
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে পাঠকের কোনো বিরোধ সৃষ্টি হয়, সেটি নিরসন করার লক্ষ্যেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে উল্লেখ করেন হাছান মাহমুদ। বলেন, এ ক্ষেত্রে বিচারিক পর্ষদ হিসেবে প্রেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের ক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধনের পর্যায়ে রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি আগামী সংসদ অধিবেশনে সেটি উপস্থাপনের জন্য। এ আইন পাস হলে প্রেস কাউন্সিলের ক্ষমতা অনেক বাড়বে। এতে জনগণ এবং একই সঙ্গে সাংবাদিকেরাও প্রেস কাউন্সিলের দ্বারস্থ হলে প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে পারবেন। প্রেস কাউন্সিল জনগণ, সাংবাদিক এবং সার্বিকভাবে রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্য কার্যকরভাবে কাজ করতে পারবে।’
তিনি বলেন, মানুষ আসলে ধীরে ধীরে বই থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। বই এখন খুব কম মানুষ পড়ে। আগে কিশোর, শিশু, যুবক ও বৃদ্ধদের বই পড়ার অভ্যাস ছিল, সেই অভ্যাস এখনকার তরুণদের মধ্যে আগের মতো আর নেই। সবাই সোশ্যাল মিডিয়াতে বুঁদ হয়ে থাকে, স্মার্টফোন নিয়ে বসে থাকে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বই পড়ার অভ্যাসটা আবারও ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন, কারণ নতুন প্রজন্মকে যদি তাদের জীবনসংগ্রামে জয়ী হওয়ার জন্য আমাদের প্রস্তুত করতে হয়, তাহলে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বই পড়ার প্রবণতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- প্রেস কাউন্সিলের সদস্য ও দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এমএ মালেক, প্রেস কাউন্সিলের সদস্য ও বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব এমএ মজিদ, বিএফইউজের সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।