শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) শিল্প-সাহিত্যের সংগঠন সাহিত্য মঞ্চের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রোটারী ক্লাব মিলনায়তনে দিনব্যাপী আয়োজনের শুভ উদ্বোধন করেন (ভার্চুয়াল) বিশিষ্ট নজরুল গবেষক ও জাতীয় অধ্যাপক ড.রফিকুল ইসলাম।
এসময় তিনি বলেন, চাঁদপুরের মানুষ বহুকাল আগে থেকেই শিল্পসাহিত্যের চর্চা হয়ে আসছে। এখানকার মানুষ সুন্দরের চর্চা করেন। চাঁদপুরের মানুষ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত। তারা চিন্তায়-চেতনায় অনেক আধুনিক। আজকের এই আয়োজন তাইর প্রমান। এমন একটি আয়োজনের অংশ হতে পেরে ভালো লাগছে। চাঁদপুর সাহিত্য মঞ্চ পরিবারকে আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।
সমাপনী পর্বে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বরেণ্য শিশুসাহিত্যিক ও সাবেক সচিব ফারুক হোসেন, কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহ, লেখক মোরশেদা নাসির।
দুটি পর্বে সভাপতিত্ব করেন সাহিত্য মঞ্চের সভাপতি মাইনুল ইসলাম মানিক এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আশিক বিন রহিম।
সম্মেলনের প্রথম পর্বে ‘মেঘনাপাড়ের সাহিত্য : অতীত ও বর্তমান’ শীর্ষক আলোচনায় সাহিত্য একাডেমীর মহা-পরিচালক কাজী শাহাদাতের সভাপতিত্বে ও কবি ম. নূরে আলম পাটওয়ারীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, মোরশেদা নাসির, মাহবুবুর রহমান সেলিম, আবদুল্লাহিল কাফী, তছলিম হোসেন হাওলাদার, জসিম মেহেদী।
দ্বিতীয় পর্বে “কবিতাপ্রহর’ শীর্ষক আলোচনায় কবি শেখ ফিরোজ আহমদ এর সভাপতিত্বে এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুজন আরিফের সঞ্চালনায় অংশগ্রহণ করেন, হোসাইন কবির, মনসুর আজিজ, আফসার নিজাম, ফজলুল হক, জাহাঙ্গীর হোসেন, হাসানুজ্জামান, আশিক বিন রহিম, মামুন অপু, নিঝুম খান এবং অতিথি কবি হিসেবে কবিতাপ্রহরে অংশগ্রহণ করেন কবি ও প্রাবন্ধিক রিপন আহসান ঋতু।
আয়োজনের তৃতীয় পর্বে ‘নাটক, সঙ্গীত, প্রবন্ধ ও অনুবাদ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রাবন্ধিক ও গবেষক সরকার আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে এবং কবি মুহাম্মদ ফরিদ হাসান এর সঞ্চালনায় অংশগ্রহণ করেন। মইনুদ্দিন লিটন, মহসিন কায়েস, জিয়াউল আহসান টিটো, তৃপ্তি সাহা এবং মাইনুল ইসলাম মানিক।
দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় কবিতাপ্রহরের মাধ্যমে। এই পর্বে কবি জামশেদ ওয়াজেদ এর সভাপতিত্বে এবং কবি ফারুক সুমনের সঞ্চালনায় অংশগ্রহণ করেন, কাজী মাহতাব সুমন, তসলিম হোসেন হাওলাদার, শাহমুব জুয়েল এবং মিজান খান।
দ্বিতীয় পর্বে; ‘শিশুসাহিত্য, ছড়া, ভ্রমণ, পুঁথিসাহিত্য’ শীর্ষক আলোচনায়, শিশুসাহিত্যিক পীযূষ কান্তি বড়–য়ার সভাপতিত্বে এবং শিশুসাহিত্যিক আহমেদ রিয়াজের সঞ্চালনায় অংশগ্রহণ করেন; দেশবরেন্য শিশুসাহিত্যিক হুমায়ুন কবীর ঢালী, হাসান আলী, প্রশান্ত ভৌমিক, হাসিনা মমতাজ, নাসরিন আক্তার, ইদ্রিস আলী, খান-ই-আজম।
তৃতীয় পর্বে ‘গল্পপ্রহর’ শীর্ষক সেমিনারে কথাসাহিত্যিক নাসিমা আনিসের সভাপতিত্বে এবং কথাসাহিত্যিক মনি হায়দারের সঞ্চালনায় অংশগ্রহণ করেন, হাবিব আনিসুর রহমান, নাহিদা নাহিদ, মেহেরুন্নেছা এবং মনিরুজ্জামান বাবলু।
সাহিত্য সম্মেলন এবারের এই নান্দনিক আয়োজনের সমাপনী অনুষ্ঠান ও ‘মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালী যুক্ত হন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি।
এসময় তিনি বলেন, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চায় অনন্য উর্বর ভূমি চাঁদপুর। বহুকাল ধরে এই জেলার শিল্প-সাহিত্যের চর্চা হয়ে আসছে। পূর্বসূরীদের অর্জনের ধারাবাহিকতা রেখে এগিয়ে যাচ্ছে চাঁদপুর। বর্তমানে সারাদেশের তুলনায় এই চর্চা চাঁদপুরে অনেক বেশি প্রোজ্জ্বল। আজকের এই সাহিত্য সম্মেলন তারই সাক্ষ্য বহন করে। আজ আপনারা একটি মাহেন্দ্রক্ষণে মিলিত হয়েছেন। আপনাদের সম্মিলিত প্রয়াসে চাঁদপুরের শিল্প-সাহিত্যের চর্চা আরো বেগবান হবে বলেই আমার বিশ্বাস। আপনাদের হাত ধরে নতুনভাবে চাঁদপুরের বিনির্মাণের সূচনা হোক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় আমরা যার অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবো।
ডা. দীপু মনি এমপি এবছরের মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, চাঁদপুরে এমন একটি আয়োজন করার জন্য চাঁদপুর সাহিত্য মঞ্চের সকলকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, চাঁদপুর সাহিত্য মঞ্চসহ চাঁদপুরে আরো যারা বিভিন্ন শিল্প সাহিত্যের সংগঠন করেন তাদের সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। বক্তব্যের একফাঁকে তিনি মঞ্চে থাকা সকল অতিথিদের সাথে একে একে শুভেচ্ছা জানান।