বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব, ভারতের সাত রাজ্য, নেপাল ও ভুটান।
ভুটান ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে, আগ্রহের কথা জানিয়েছে সৌদি আরব ও নেপাল। বিষয়টি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) একনেক সভায় ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন‘ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের সামনে প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সিঙ্গাপুর থেকে ফ্রান্স পর্যন্ত সংযুক্ত SEA-ME-WE-6 সাবমেরিন ক্যাবলটি ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর হয়ে ভূমধ্য সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। ক্যাবলটির কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিশর ও ফ্রান্সে। বাংলাদেশের ব্র্যাঞ্চটি বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারস্থ ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এতে ব্যয় হবে ৬৯৩ কোটি ১৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
ড. শামসুল আলম বলেন, ‘প্রকল্পটি হাতে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছেন। কারণ, এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। তবে সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ নেবে, নাকি মেইন লাইন থেকে নেবে, তা জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব-ভারত-নেপাল-ভুটান ব্যান্ডউইথ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করায় প্রধানমন্ত্রী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।’
সিনিয়র সচিব আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যান্ডউইথের চাহিদা বাড়ছে। ২০২৫ সালে একটি সাব মেরিন ক্যাবল অকেজো হয়ে যাবে। এজন্য সময়োপযোগী একটি প্রকল্প হাতে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছেন। প্রকল্পের আওতায় সাবমেরিন ক্যাবল ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হবে। ১৩ হাজার ২৭৫ কিলোমিটার কোর সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনসহ ১ হাজার ৮৫০ কিলোমিটার ব্র্যাঞ্চ সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হবে।’
এছাড়া, ৩ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)।
এ প্রকল্প প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে জিইডি সদস্য বলেন, ‘ইন্টারনেট সেবা রিমোট এলাকায় নিয়ে যেতে বিটিসিএলকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শুধু নগরে নয়, হাওর-বাওড়-পাহাড় এলাকায় ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে বিটিসিএলকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।’