শিরোনাম
খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ মন্ত্রী-এমপি’র স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানি বৃদ্ধির প্রস্তাব বিবেচনাধীন প্রতীক বরাদ্দের আগেই ডিজিটাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানো যাবে: ইসি লিটারে সয়াবিনের দাম বাড়লো ৪ টাকা, কমলো খোলায় বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য সেবা বৃদ্ধি পেয়েছে: দীপু মনি বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস হচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোনালদোর পাওনা ১১৪ কোটি টাকা দিতে জুভেন্টাসকে নির্দেশ আদালতে হাজির হতে পরীমণিকে সমন জারি স্বাস্থ্যসেবায় দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে : রাষ্ট্রপতি সংবাদপত্র বন্ধ থাকবে ৯-১৪ এপ্রিল আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম ঈদের চাঁদ দেখার আহ্বান সৌদি আরবের আজ পবিত্র শবে কদর চাঁদপুরে ৯০ কেজি জাটকা সহ গ্রেফতার ১
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৫ অপরাহ্ন

মাসে লেনদেন লাখ কোটি টাকা

বানিজ্যিক ডেস্ক / ৬৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৭ মার্চ, ২০২৩

হিসাব খুলতে কোনো টাকা লাগে না। মুহূর্তে সর্বত্র পাঠানো যায় টাকা। একই সঙ্গে কেনাকাটার বিল পরিশোধ, ঋণ সুবিধাসহ যোগ হয়েছে নতুন নতুন অনেক পরিষেবা। বিদেশ থেকে আসছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সও। ফলে মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) ওপর মানুষের আগ্রহের পাশাপাশি বাড়ছে নির্ভরশীলতা। গ্রাহকের সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে ১৩টি এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের তথ্য দেওয়া হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকরা এক লাখ ৫৯৩ কোটি টাকা লেনদেন করেছে। এই অঙ্ক মোবাইলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড লেনদেন।

 

জানুয়ারিতে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে তিন হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। তবে এখানে ডাক বিভাগের সেবা ‘নগদ’-এর তথ্য যুক্ত হয়নি। নগদের হিসাব যোগ করলে মোট লেনদেন আরও প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বেড়ে যাবে। সেই হিসাবে এমএফএস-এ লেনদেন হচ্ছে এক লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা; আর দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় চার হাজার ২০০ কোটি টাকা।

 

তথ্য বলছে, গত জানুয়ারিতে মোট লেনদেনের মধ্যে টাকা জমা হয়েছিল ৩১ হাজার ২৬০ কোটি ও উত্তোলিত হয়েছিল ২৮ হাজার ৬৮৮ কোটি। ফলে মোট লেনদেনে প্রায় ৬০ শতাংশই ছিল জমা ও উত্তোলন। বাকি ৪০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে ডিজিটাল।

এর আগে গত বছরের এপ্রিল মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সর্বোচ্চ এক লাখ ৭ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। পাঁচ বছর আগেও যেখানে লেনদেন হতো ৩৪ হাজার কোটি টাকার মতো। এখন তা লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

দেশে এমএফএস সেবার বড় অংশ দখল করে আছে ‘বিকা‌শ’। সেবার পরিধিও তাদের সবচেয়ে বেশি। প্রতিষ্ঠানটির হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম ঢাকা পোস্ট‌কে ব‌লেন, এখন মোবাইল আর্থিক সেবার ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা বেড়েছে। এর সঙ্গে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি, সৃজনশীল ও সময়োপযোগী নানা সেবা পরিষেবা যুক্ত হচ্ছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তকরণের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সেবার বিল ও সুরক্ষা ভাতা, উপবৃত্তি-প্রণোদনা বিতরণে এখন এমএফএস ব্যবহার হচ্ছে। রেমিট্যান্স আসছে, কর্মীদের বেতন বোনাস দেওয়া হচ্ছে। ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষ ক্যাশলেস লেনদেনে অভ্যস্ত হচ্ছেন। এসব কারণে এমএফএস সেবায় লেনদেনের সঙ্গে গ্রাহক সংখ্যা বাড়ছে। সামনে ঈদ কেনাকাটা বাড়বে, সঙ্গে এ সেবার লেনদেনও বেড়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের সঙ্গে দিনদিন বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যা। বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ইউ ক্যাশ, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ নানা নামে ১৩টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ১৩৭ জন। আর আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৬৯ হাজার ১১২ জনে।

এছাড়াও, শুধু ‘নগদ’-এ রয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি গ্রাহক। এ হিসাব যোগ করলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা ছাড়াবে ২৫ কোটি। এর কারণ, অনেক গ্রাহক একাধিক সিম ব্যবহার করছে। লেনদেনের সুবিধার্থে একাধিক সিমে হিসাব খুলছে।

এখন গ্রাহক ঘরে বসেই ডিজিটাল কেওয়াইসি (গ্রাহক সম্পর্কিত তথ্য) ফরম পূরণ করে সহজেই এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে হিসাব খুলতে পারছেন। ফলে গ্রাহক ঝামেলা মুক্তভাবে হিসাব খুলতে পারছেন।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল আর্থিক সেবার যাত্রা শুরু হয়। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সিংহভাগই বিকাশের দখলে। এরপর ‘নগদ’-এর অবস্থান।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া এখন গাড়িচালক, নিরাপত্তাকর্মী ও গৃহপরিচারিকাদের বেতনও দেওয়া হচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবা মাধ্যম ব্যবহার করে। পোশাক খাতসহ শ্রমজীবীরা এমএফএস সেবার মাধ্যমে গ্রামে টাকা পাঠাচ্ছে। যার ফলে দিনে দিনে নগদ টাকার লেনদেন কমে আসছে। এ প্রবণতা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

রাজধানীর খিলগাঁওয়ে একটি বাসার নিরাপত্তাকর্মী ও কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করছেন মো. আসরাফ। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতি মাসে ১৩ হাজার টাকা বেতন পাই। মালিক ১০ হাজার টাকা মোবাইলে দেয়, বাকি তিন হাজার টাকা আমাকে ক্যাশ দেন। ওই টাকা দিয়ে এখানে খরচ করি। আর ১০ হাজার টাকার কিছু মোবাইলে রেখে বাকি টাকা গ্রামে পাঠিয়ে দেই। এই টাকা দিয়ে সংসারের খরচ চালাই। মোবাইলে টাকা দিলে খরচ কম হয়, আবার সহজে টাকা গ্রামে পাঠানো যায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, বর্তমানে দেশের সামগ্রিক পরিশোধ ব্যবস্থায় এমএফএস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কোভিড-১৯ এর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এমএফএসের আওতা ও লেনদেনের ব্যাপ্তি প্রসারের পাশাপাশি এ মাধ্যম ব্যবহার করে সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আর্থিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে স্বল্পআয়ের মানুষের মধ্যে এমএফএস ব্যবহারের প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ফলে ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবং ডিজিটাল লেনদেন উৎসাহিত করতে এমএফএসের ব্যক্তি হিসাবের লেনদেনের সীমা বাড়ানো হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ