কচুয়া উপজেলার বহুল আলোচিত স্কুল ছাত্রী মালিয়া মাসুদ ওরফে নাবিলা (১৩)কে অপহরনকারী শাকিব (১৯) আজও গ্রেফতার হয়নি। নাবিলা কচুয়া উপজেলার মালচোঁয়া গ্রামের সৌদিআরব প্রবাসী মাসুদ রানার মেয়ে। সে স্থানীয় প্রসন্নকাপ উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
নাবিলার মা আছমা আক্তার জানায়, গত ১ জুন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নাবিলা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিলে ঘর হতে বের হয়ে টয়লেটে যায়। এরপর আর নাবিলা ঘরে ফিরে আসেনি। তাকে অনেক খোঁজা খুজির পরও পাওয়া না যাওয়ায় কচুয়া থানায় গত ২ জুন একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। ডায়েরি নং ১০০।
আছমা বেগম আরো জানান, শাকিব তার ‘জ্যা’ রোকসানা আক্তারের ভাই। অর্থাৎ দেবর জাহাঙ্গীর আলমের শ্যালক। শাকিব একই উপজেলার দোঘর গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতা মনির হোসেন। শাকিব আত্মীয় বিধায় মাঝে মধ্যে আমাদের বাড়ি বেড়াতে আসতো। সে প্রায়ই আমার মেয়ে নাবিলাকে উত্যক্ত করতো ও কুপ্রস্তাব দিতো। কিন্তু আমার মে তার প্রস্তাবে সাড়া দিতোনা।
শাকিব তার বোন রোকসানা ও ভগ্নীপতি জাহাঙ্গীর আলমের সহায়তায় নাবিলাকে অপহরণ করে নিয়ে যেতে পারে এমনি সন্দেহের কথা কচুয়া থানা অভিযোগ করলে, পুুলিশ রোকসানা ও জাহাঙ্গীর আলমকে থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ও নাবিলাকে বের করে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এতে রোকসানা ও জাহাঙ্গীর আলম নাবিলাকে বের করে দিবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও পরমুহুর্তে বের করে দেই দিচ্ছি করে তারা সময় ক্ষেপন করতে থাকে। এরই একপর্যায়ে ৫জুন থানা পুলিশ ও আমরা জানতে পারি যে, নাবিলা ও শাকিব কসবা উপজেলার সদরের একটি কলেজের শিক্ষক হিসাবে কর্মরত শাকিবের মামা সেলিমের বাসায় আছে। এরপর ওইদিনই কচুয়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় সেলিমের বাসা থেকে নাবিলাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। সেলিমের বাসায় পুলিশের উপস্থিতি টেরপেয়ে শাকিব দ্রুত পালিয়ে যায়। নাবিলাকে উদ্ধারের দিনই নাবিলার মা বাদী হয়ে কচুয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৯ (১) ধারায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১১। শাকিব তার বোন রুনা আক্তারসহ (রোকসানার ছোট বোন) অপহরন কাজে সহযোগিতা করার অভিযোগে ৭জনকে আসামী করা হয়। মামলায় উল্লেখ করা হয়, কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময় শাকিব নাবিলাকে তার অজ্ঞাতনামা বন্ধুদের বাসায় নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কচুয়া থানার এসআই জাহাঙ্গীর জানান, চাঁদপুরের আদালতের বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট কতৃক ভিকটিম নাবিলা আক্তারের ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। জবানবন্দিতে নাবিলা জোরপূর্বক ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করে। তার মেডিকেল পরীক্ষাও করানো হয়েছে। মামলার ৭ নম্বর আসামী শাকিবের নিকট আত্মীয় দেলোয়ার হোসেনকে ৮জুন গ্রেফতার করা হয়েছে। শাকিবসহ অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।