শিরোনাম
ভিয়েতনামের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান আকাশপথে ট্যাক্সি চলতে বেশি দেরি নেই মোস্তাফিজের বোলিং তোপে চাপের মুখে নিউজিল্যান্ড অক্টোবরে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল ৬ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা বাংলাদেশির মরদেহ ৭ দিন পর ফেরত দিলো বিএসএফ বয়স নিয়ে আলোচনা সত্ত্বেও আবারো নির্বাচন করবেন বাইডেন রাজশাহীতে নবনির্মিত কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন কুমিল্লায় আ’লীগের দু`গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক শুভ জন্মদিন সালমান শাহ বান্দরবানে সেনাবাহিনী-কেএনএফ গোলাগুলি, আহত ১ কর্মকর্তাদের বিতর্কিত আচরণে ব্যবস্থা নেবে কমিশন: সিইসি গাজীপুরে কোটি টাকার মাদকসহ ২জন গ্রেফতার
রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:১১ পূর্বাহ্ন

রমজানের পর মুমিনের ৭ করণীয়

ইসলামিক ডেস্ক / ২২০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১

পুণ্যের বসন্ত মহিমান্বিত রমজান বিদায় নিয়েছে। রমজান বিদায় নেওয়ার পর সংযম ও সাধনার জীবন পরিহার করছে বহু মানুষ। অথচ রমজানের দাবি হলো—পাপমুক্ত যে জীবনের অনুশীলন মুমিন রমজানে করেছিল, তা রমজানের পরেও অব্যাহত থাকবে এবং আল্লাহমুখী, ইবাদতমুখর যে সময় সে কাটিয়েছিল, তাতে কোনো ছেদ আসবে না। কেননা পবিত্র কোরআনের নির্দেশ হলো, ‘তুমি তোমার প্রতিপালকের ইবাদত করো মৃত্যু আসার আগ পর্যন্ত।’ (সুরা : হিজর, আয়াত : ৯৯)

দৃঢ়তার পর শিথিলতা নিন্দনীয়

দ্বিনের ব্যাপারে দৃঢ়তা অর্জনের পর তাতে শিথিলতা প্রদর্শন করা কাম্য। আল্লাহ মুমিনদের এমন কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা সেই নারীর মতো হয়ো না, যে তার সুতা মজবুত করে পাকানোর পর তার পাক খুলে নষ্ট করে দেয়।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৯২)

তাসফিরবিদরা বলেন, এ আয়াতে মহান আল্লাহ দ্বিনের ব্যাপারে অধঃপতনের নিন্দা করেছেন। বিশেষত আল্লাহমুখী জীবন পরিহার করে পুনরায় পাপের দিকে ফিরে যাওয়া আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয়।

দ্বিনের ওপর দৃঢ় থাকতে সহায়ক আমল

রমজানে মুমিনজীবনে যে পরিচ্ছন্নতা আসে, তা ধরে রাখতে মনীষীরা কিছু আমল করার পরামর্শ দেন। তা হলো—

  • দোয়া করা : মুমিন রমজানের পরও একটি সুন্দর জীবনযাপনের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবে। আল্লাহর অনুগ্রহেই কেবল মুমিন বিভ্রান্তির হাত থেকে আত্মরক্ষা করতে পারে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! সরল পথ প্রদর্শনের পর আপনি আমাদের অন্তরকে সত্য লঙ্ঘনপ্রবণ করবেন না এবং আপনার কাছ থেকে আমাদের করুণা দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি মহাদাতা।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৮)
  • আল্লাহভীতির জীবন যাপন করা : দীর্ঘ এক মাস রোজা আদায়ের প্রধান উদ্দেশ্য তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জন করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল পূর্ববর্তীদের ওপর; যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

সুতরাং রমজান-পরবর্তী জীবনে যদি আল্লাহর ভয় অন্তরে রেখে চলা যায়, তবে দীর্ঘ এক মাসের সিয়াম সাধনা সার্থক বলে গণ্য হবে। আর আল্লাহভীতিই মুমিনজীবনে সাফল্যের মাপকাঠি।

  • আমলের ধারাবাহিকতা রক্ষা : রমজান মাসে যেসব নেক আমল করা হতো, তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা মুমিনের দায়িত্ব। মহানবী (সা.) আমলের ধারাবাহিকতা রক্ষায় উৎসাহিত করেছেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী (সা.) বলেছেন, তোমরা সাধ্যানুযায়ী (নিয়মিত) আমল করবে। কেননা তোমরা বিরক্ত না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ প্রতিদান দেওয়া বন্ধ করেন না। মহান আল্লাহ ওই আমলকে ভালোবাসেন, যা নিয়মিত করা হয়, যদিও তা পরিমাণে কম হয়। তিনি (সা.) কোনো আমল করলে তা নিয়মিতভাবে করতেন।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৩৬৮)
  • মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় : সমাজের অনেকে রমজান মাসে মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করে এবং রমজানের পর মসজিদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে না—এটি নিন্দনীয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) সেসব মানুষের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, যারা মসজিদে উপস্থিত না হয়ে ঘরে নামাজ আদায় করে। তিনি বলেন, ‘যদি ঘরে নারী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা না থাকত, তবে আমি এশার নামাজে দাঁড়াতাম এবং দুই যুবককে নির্দেশ দিতাম, যারা (জামাতে অংশ না নিয়ে) ঘরে আছে তাদের পুড়িয়ে দিতে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৮৭৯৬)
  • কোরআনচর্চা অব্যাহত রাখা : রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে পরবর্তী যুগের সব মনীষী রমজান মাসে কোরআনচর্চা বাড়িয়ে দিলেও বছরের কোনো সময় তাঁরা কোরআনচর্চা থেকে একেবারেই বিরত থাকতেন না। ইসলামী আইনজ্ঞরা কোরআন থেকে বিমুখ হওয়াকে হারাম বলেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে কোরআন পরিত্যাগকারীদের বিরুদ্ধে আল্লাহর দরবারে অভিযোগ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘রাসুল বললেন, হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় এই কোরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করে।’ (সুরা : ফোরকান, আয়াত : ৩০)
  • সুযোগ হলে নফল রোজা রাখা : রমজানের পর রাসুলুল্লাহ (সা.) শাওয়াল মাসে গুরুত্বের সঙ্গে ছয় রোজা পালন করতেন। একাধিক বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা শাওয়ালের ছয় রোজার মর্যাদা ও ফজিলত প্রমাণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, অতঃপর তার সঙ্গে সঙ্গে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন পূর্ণ বছরই রোজা রাখল।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৬৪)

এ ছাড়া মহানবী (সা.) আইয়ামে বিজ তথা চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রোজা রাখতেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমার বন্ধু (সা.) আমাকে তিনটি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতি মাসে তিন দিন করে সওম পালন করা, দুই রাকাত সালাতুদ-দুহা আদায় এবং ঘুমানোর আগে বিতর নামাজ পড়া। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৮১)।

  • আল্লাহওয়ালাদের সংস্রব : আল্লাহওয়ালা ও আল্লাহমুখী মানুষের সংস্রব মানুষকে সুপথে থাকতে সহায়তা করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১১৯)

পূর্ববর্তী পুণ্যাত্মা মনীষীরা রমজানের পর পরিচ্ছন্ন জীবনযাপনের প্রত্যয় গ্রহণ করতেন। কাব (রা.) বলতেন, ‘যে ব্যক্তি রোজা রাখে এবং মনে মনে প্রত্যয় গ্রহণ করে রমজানের পর আল্লাহর অবাধ্য হবে না, সে বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে রোজা রাখে এবং মনে মনে বলে ফিতরের পর আল্লাহর অবাধ্য হবে, তার রোজা প্রত্যাখ্যাত হবে।’ (লাতায়িফুল মাআরিফ)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ