‘মিশন এক্সটিম’ সিনেমার মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় যাত্রা শুরু করতে  চলেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। সিনেমাটি ২০২০ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মহামারির কারণে তা আর হয়নি। বছর ঘুরে আবার এল ঈদুল ফিতর। এবারও করোনা পরিস্থিতির কারণে সিনেমাটির মুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শেষ মুহূর্তে মুক্তি না পেলে খুব কষ্ট পাবেন এই অভিনেত্রী, এমনটা ভেবেই তাঁর বন্ধু-বান্ধবী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সান্ত্বনা দিতে ফোন করছেন তাঁকে।

তবে এই মুহূর্তে নিজের সিনেমা নয়, বরং দেশের পরিস্থিতি নিয়েই বেশি ভাবছেন ঐশী। ক্যারিয়ারের অভিষেক সিনেমা নিয়ে সবার মতোই আলাদা আগ্রহ ছিল এই তরুণ অভিনেত্রীর। সিনেমাটি নিয়ে তিনি যেমন আগ্রহী, তেমনি ভয়ের মধ্যেও রয়েছেন। আরিফিন শুভর সঙ্গে তাঁর অভিনয়কে দর্শক কীভাবে নেবেন, সেটা নিয়ে চিন্তিত তিনি। তবে বছরের শুরুতেই সিনেমাটি নিয়ে নিজ উদ্যোগে প্রচারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

ঐশী ভেবেছিলেন, দর্শকের সঙ্গে ঈদে সিনেমাটি হলে গিয়ে দেখবেন। সেটা আর হচ্ছে না। তাই মন খারাপ হওয়াই স্বাভাবিক জানিয়ে ঐশী বললেন, ‘অনেকেই আমাকে ফোন দিচ্ছেন। সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন, মন খারাপ কোরো না, শক্ত থাকো। ছবিটি এই ঈদে মুক্তি না পেলেও আগামী ঈদে মুক্তি পাবে। সিনেমাটি তোমার ক্যারিয়ার ঠিক করে দেবে। প্রথম সিনেমা সুপারহিট হলে ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে যাবে! এসব ভেবে আমার জন্য সবাই টেনশন করছে। কিন্তু আমার দেশের অর্থনীতির কথা ভেবে সিনেমা মুক্তি নিয়ে একটুও মন খারাপ হয়নি। কিন্তু মন খারাপ হওয়া উচিত ছিল।

২০১৮ সালে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের মুকুট জেতেন ঐশী। তাঁর ইচ্ছা ছিল সিনেমায় অভিনয়ের। পরের বছর ২০১৯ সালে এসে সেই সুযোগ পেয়ে যান তিনি। পরপর তিনটি ছবিতে অভিনয় করলেও করোনার কারণে কোনো সিনেমাই মুক্তি পায়নি। তাঁর ইচ্ছা সিনেমায় অভিনয় করে যাওয়া। তবে বুঝেশুনেই তিনি পা ফেলতে চান। গল্প, চিত্রনাট্য, পরিচালক বুঝে সিনেমা করবেন তিনি। সেখানে এই মুহূর্তে কিছুটা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা।

সিনেমাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়া প্রসঙ্গে ঐশী বলেন, ‘আমার সিনেমা আগে রিলিজ হোক। দেখি দর্শক কীভাবে নেয়। আমার প্রথম সিনেমায় নতুন হিসেবে কিছু ভুল আছে। আশা করছি, দর্শক সেটা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। তা ছাড়া হাতে আরও সিনেমা আছে, সেগুলো দর্শক কীভাবে নেয় সেটা দেখেই এগোতে চাই।’

ঐশী হাসিমুখে নিজেকে এখনো গ্রামের মেয়ে বলে পরিচয় করিয়ে দেন। গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ঢাকায় আসেন। স্বপ্ন ছিল অভিনেত্রী হবেন। পড়াশোনার পাশাপাশি একটু একটু করে তাঁকে ক্যারিয়ার নিয়ে এগোতে হয়েছে। ছিল না পরিচিত তেমন কেউ।

মিডিয়াভীতি নিয়ে বললেন, ‘আমার জার্নিটা ছিল সৎভাবে এগিয়ে যাওয়ার। কারণ, সব জায়গার মতো মিডিয়াতেও ভালো–খারাপ মানুষ আছে। সেটা নিয়ে মিডিয়ায় আসার আগে অনেক ভয় ছিল। আদৌ আমি কাজ করতে পারব কি না। তবে কাজ শুরুর পরে আমাকে খারাপ কোনো খারাপ অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়নি। সৎ থেকে কাজ করতে পারছি, মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। এ জন্য আমি ভাগ্যবান। এ জন্য পরিশ্রমটা আগে দরকার।’ সিনেমায় অনিশ্চিত ক্যারিয়ারের কথা জানিয়ে বললেন, ‘সিনেমায় কাজ করা মানেই আমার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত না। আমাকে নিজের যোগ্যতা দিয়ে টিকে থাকতে হবে। দর্শকই আমার শক্তি। তারাই পারে আমাকে টিকিয়ে রাখতে। আর মিডিয়ায় আমার কোনো “গডফাদার” নেই, যাঁরা আমাকে ব্যর্থ হওয়ার পরেও বারবার অভিনয়ের সুযোগ দেবেন।’

‘মিশন এক্সটিম’–এর পার্ট-১ ও পার্ট–২ শেষ করেই ঐশী ‘আদম’ ও ‘রাত জাগা ফুল’ নামে দুটি ছবির শুটিং শেষ করেছেন। দুটি ছবিই মূলধারার বাইরের, কিছুটা ভিন্ন ঘরানার। এ মুহূর্তে ছবিগুলোর পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। এই বছরেই তিনটি ছবিরই মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। সম্প্রতি তাঁর আরও কয়েকটি সিনেমায় শুটিংয়ের কথা ছিল। করোনার কারণে তা আপাতত বন্ধ।