শিরোনাম
খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ মন্ত্রী-এমপি’র স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানি বৃদ্ধির প্রস্তাব বিবেচনাধীন প্রতীক বরাদ্দের আগেই ডিজিটাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানো যাবে: ইসি লিটারে সয়াবিনের দাম বাড়লো ৪ টাকা, কমলো খোলায় বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য সেবা বৃদ্ধি পেয়েছে: দীপু মনি বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস হচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোনালদোর পাওনা ১১৪ কোটি টাকা দিতে জুভেন্টাসকে নির্দেশ আদালতে হাজির হতে পরীমণিকে সমন জারি স্বাস্থ্যসেবায় দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে : রাষ্ট্রপতি সংবাদপত্র বন্ধ থাকবে ৯-১৪ এপ্রিল আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম ঈদের চাঁদ দেখার আহ্বান সৌদি আরবের আজ পবিত্র শবে কদর চাঁদপুরে ৯০ কেজি জাটকা সহ গ্রেফতার ১
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০৫ পূর্বাহ্ন

সব কথায় কান দিলে চলে না : শেখ হাসিনা

দর্পণ ডেস্ক / ১৭৭ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ফটো)

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ করোনাভাইরাসের সময়ে আমরা ইতোমধ্যে টিকা দেওয়া শুরু করেছি। অনেকের অনেক কথা শুনতে হয়। এসব কথায় কান দিলে চলে না।

যারা এর সমালোচনা করছে, তাদের কথায় গুরুত্ব দেয়ার কিছু নেই। অনেকেই তো বলেছে- বাংলাদেশে টিকা আসবে না। অনেক উন্নত দেশও কিন্তু আনতে পারেনি। আমি কিন্তু কোনোদিকে তাকাইনি। আমার কাছে মানুষ সব থেকে বড়, মানুষের জীবন বড়।

বুধবার দুপুরে আওয়ামী যুবলীগের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন তিনি।

বাংলাদেশ যাতে দ্রুত করোনাভাইরাসের টিকা পায়, তা নিশ্চিত করতে সরকারের নানা প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমি যখন প্রথম টিকার জন্য টাকা দিই, এক হাজার কোটি টাকা আলাদা রেখে… আমি সঙ্গে সঙ্গে অ্যাডভান্স করে দিয়েছিলাম যে যখনই ভ্যাকসিন তৈরি হবে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যখনই অনুমোদন দেবে, সবার আগে যেন বাংলাদেশ পায়। এবং সেটাই আজকে প্রমাণিত সত্য।

এসময় টিকা উপহার দেয়ায় ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখন আরও অনেকেই দিতে চাচ্ছে। কিন্তু আমাদের যেটা প্রয়োজন, আমরা কিন্তু নিয়ে এসেছি।

টিকা নিয়ে অনেকের মধ্যে শুরুতে কিছুটা দ্বিধা থাকলেও এখন তা কেটে গেছে। তিনি বলেন, এখানে যুবলীগের একটা দায়িত্ব আছে।

বিশেষ করে আমরা বলেছি যে ৪০ বছরের উপরে যারা, আর বিশেষ করে শিক্ষক থেকে শুরু করে অন্যান্য যারা সব সময় মানুষের পাশে কাজ করতে হয়, তাদের আগে দিতে হবে। মানুষের মাঝে ভয়টা দূর করতে হবে।

সবাই যেন টিকাটা নেয়। সেই ব্যবস্থা করে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।

টিকা পাওয়ার পরও সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, টিকা নেয়ার পরেও কিন্তু স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে।

মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, হাত পরিষ্কার করতে হবে এবং সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

এটা সবার নজরে রাখতে হবে এবং এটা যুবলীগ করবে, সেটা আমি চাই। অনুষ্ঠানে যুবলীগের নতুন নেতৃত্বকে অভিনন্দন জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে সব সময় সব আন্দোলনে তরুণরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।

কাজেই তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা ইনশাআল্লাহ আমরা গড়ে তুলব। করোনাভাইরাসের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুরু থেকেই আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

দুর্যোগ আসবে, তবে দুর্যোগ যখন আসে তখন আমাদের শক্ত থাকতে হবে। মানুষের পাশে থাকতে হবে। পরিকল্পিতভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। কাজ করতে হবে। তবেই যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করা যাবে এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

এ সময় দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি যুবলীগের করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।

তরুণদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের তো বয়স হয়ে গেছে। আজকের তরুণরাই তো আগামী প্রজন্ম এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

এ সময় শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতার আজীবন সংগ্রামের কথা স্মরণ করার পাশাপাশি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

দেশের উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা প্রত্যেকে নিজেদের ভাগ্য নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। মানুষের জন্য কিছু করেননি।

আওয়ামী লীগই মানুষের জন্য কাজ করেছে, করছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আমি নাকি বিরোধী দলের নেতাও হতে পারব না।

এখন আমরা ক্ষমতায় আছি বলে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারছি। এজন্য আমরা মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। তাদের জন্যই কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মুজিববর্ষের কর্মসূচি পালন করছি। মুজিববর্ষ উপলক্ষে মানুষের ঘর করে দিচ্ছি। মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না। ২৬ মার্চ থেকে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রবেশ করব।

২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা নির্দিষ্ট করেছি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করব।

যেহেতু করোনাভাইরাসের কারণে আমরা কর্মসূচি পরিবর্তন করেছি সেখানে আমরা জনসমাগম বাদ দিয়ে মানুষের কল্যাণমুখী কাজ করব। শেখ হাসিনা আরও বলেন, যে দল ক্ষমতাকে ভোগের বস্তু হিসাবে নিয়েছিল তাদের অস্তিত্ব নেই, ভবিষ্যতেও থাকবে না।

যারা অর্থলোভ নিয়ে রাজনীতি করে তারা কখনই রাজনীতিতে টিকে থাকতে পারে না। জনকল্যাণের কথা চিন্তা করে রাজনীতি করলে টিকে থাকা যায়। লোভ নিয়ে রাজনীতি করলে তা সম্ভব নয়।

১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর দেশের প্রথম ও সর্ববৃহৎ এ যুব সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১১ নভেম্বর ছিল যুবলীগের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

তবে করোনাভাইরাসের কারণে সে সময় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভার আয়োজন করতে পারেনি সংগঠনটি। ফলে প্রায় ৩ মাস পরে বুধবার রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ সভার আয়োজন করা হয়।

বেলা ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন শেখ হাসিনা। এ সময় যুবলীগ নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগানের মধ্য দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়।

পরে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। শুরুতেই বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্ট নিহত ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহতদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবনের তিনটা পর্ব নিয়ে তিনটি কবিতা আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী যুবলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ূন বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরে যিনি বাঙালি জাতিকে আবার ঐক্যবদ্ধ করে আজকে গণতান্ত্রিক ধারায় উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন তখনই অনেকের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।

যাদের কোনো প্ল্যাটফর্ম নেই, জনভিত্তি নেই, আওয়ামী লীগ ও দেশের বিরোধিতা করাই যাদের কাজ তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, অপশক্তিকে মোকাবিলা করার শপথ নিয়ে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

এক-এগারো সরকারের সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে যুবলীগের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যুবলীগ সর্বপ্রথম প্রতিবাদ করেছিল।

সভায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশে করে বলেন, আপনার কোনো কর্মী অবসর নিতে চায় না।

আমৃত্যু আপনার সঙ্গে কাজ করতে চায়। গত সম্মেলনে আপনি ৫৫ বছরের বাধ্যবাধকতা দিয়ে দিয়েছিলেন। এতে করে অনেককেই অনিচ্ছায় সংগঠন থেকে অবসর নিতে হয়েছে।

আমার সামনে একঝাঁক যুব নেতৃত্ব, তাদের অনেকে বয়সের কারণে আগামী সম্মেলনে বাদ যাবে। তিনি বলেন, আমাদের অনুরোধ- আপনি বয়সের এ বাধ্যবাধকতা তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বলেন, আপনার বিরুদ্ধে আলজাজিরার যে ষড়যন্ত্র, সেই ষড়যন্ত্র আপনার নেতৃত্বকে বরং আরও শক্তিশালী করেছে।

কারণ যারা আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তারাই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়।

সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ নতুন ও যুবকদের উৎসাহ জোগাতে এবং বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ‘যুব উদ্যোক্তা সম্মেলন ও জব ফেয়ার’ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান।

তিনি বলেন, আমরা কতগুলো কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে একটি যুব উদ্যোক্তা সম্মেলন ও জব ফেয়ার। তাছাড়া কৃষকদের কৃষি উপকরণ ও গবাদিপশু বিতরণের কর্মসূচি নিয়েছি।

এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হাসান খান নিখিল ইয়াবার ছোবল থেকে যুব সমাজকে মুক্ত করে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যে কোনো মূল্যে যুবলীগে কলুষিত ব্যক্তিদের প্রবেশ ঠেকানো হবে।

এ সময় যুবলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

  • তথ্যসূত্র : যুগান্তর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ