২০২১ সালটা দুর্দান্ত মেজাজে শুরু করেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। জুভেন্টাসের জাদুকর ফুটবল সম্রাট পেলেকে টপকে ক্লাব ও দেশ মিলিয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় দু’নম্বরে উঠে এসেছেন। ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলের ঝুলিতে ছিল ৭৫৭টি গোল। রোনালদোর এখন ৭৫৮টি গোল।
রোববার গভীর রাতে উডিনেজকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে জুভেন্টাস। ম্যাচে জোড়া গোল করেই পেলেকে টপকে যান সিআর সেভেন। পরের ম্যাচে এসি মিলানের বিরুদ্ধে খেলবে জুভেন্টাস। সেখানে অস্ট্রিয়ার ফুটবলার জোসেফ বিকানকে স্পর্শ এবং টপকে যাওয়ার সুযোগ থাকছে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারের সামনে। বিকানের ব্যাগে আছে ৭৫৯টি গোল। তাকে সিংহাসতচ্যূত করতে পারলেই রোনালদো হয়ে যাবেন ক্লাব ও দেশ মিলিয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ গোলদাতা।।
রোনালদো আর রেকর্ড এখন সমার্থক। তিনি মাঠে নামলে ফুটবলবিশ্ব রেকর্ড ভাঙা-গড়ার গন্ধ পেতে শুরু করে দেয়। পরিসংখ্যানবিদরা তৈরি হয়ে যান খাতা-কলম নিয়ে। চলতি বছরেও রোনালদোর সামনে একাধিক রেকর্ড ভাঙার হাতছানি রয়েছে। দেখে নেওয়া যাক বিকানের রেকর্ড ভাঙা ছাড়াও আর কোন পাঁচ রেকর্ড ভাঙতে পারেন সাত নম্বর জার্সিধারী।
পতুর্গালের হয়ে ১৭০টি ম্যাচে ১০২টি আন্তর্জাতিক গোল করেছেন রোনালদো। সর্বকালের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক গোলদাতা হওয়ার থেকে সাত গোল দূরে তিনি। ইরানের আলি দেইর নামে ১০৯টি আন্তর্জাতিক গোল রয়েছে। যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। রোনালদোর পক্ষে এই রেকর্ড ভাঙা অসম্ভব কিছু নয়।
৩৫ বছরের রোনালদো এখনও পর্যন্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে পাঁচটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন। স্পেনের ফ্রান্সিসকো হেন্টোর সঙ্গে যুগ্মভাবে রোনালদোই সবচেয়ে বেশি বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বাদ পেয়েছেন। এবার জুভেন্টাসের হয়ে জিততে পারলে বিশ্বের প্রথম ফুটবলার হিসেবে সবচেয়ে বেশিবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতবেন তিনি।
টুর্নামেন্টের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা রোনালদো হ্যাটট্রিক করেছেন ৯টি। তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসির সঙ্গে এই রেকর্ড রয়েছে তার। এবার আরেকটি হ্যাটট্রিক করলেই রোনালদো হয়ে যাবেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবচেয়ে বেশিবার হ্যাটট্রিককারী।
ইংল্যান্ডে গিয়ে ম্যান ইউয়ের হয়ে, স্পেনে গিয়ে রিয়ালের জার্সিতে রোনালদো সর্বোচ্চ গোলাদাতা হয়েছেন। এবার ইতালিতে জুভেন্টাসের হয়ে এই কাজ করতে পারলে তিন দেশের সর্বোচ্চ গোলদাতার অনন্য নজির গড়বেন তিনি।
রোনালদোর ক্যাপ্টেনসিতে ২০১৬ সালে পর্তুগাল প্রথমবার ইউরো কাপ জিতেছিল। ইউসেবিও-ফিগোর দেশকে ইউরোপ সেরার শিরোপা দিয়েছিলেন রোনালদো। এই মুহূর্তে মিশেল প্লাতিনির সঙ্গে তিনি ইউরোর আসরের যুগ্ম সর্বোচ্চ গোলদাতা। দুই কিংবদন্তিরই ৯টি করে গোল আছে। আর একটি গোল করতে পারলেই রোনালদো পৌঁছে যাবেন মগডালে।
রোনালদোর যত বয়স বাড়ছে ততই যেন ক্ষীপ্র হয়ে উঠছেন তিনি। এটাই তার ক্যারিশমা। ৩০ পেরিয়েও রোনালদোর ফিটনেস ও গোল করার ক্ষুধা তরুণ ফুটবলারদের ঈর্ষার কারণ। করোনাকে হারিয়ে মাঠে ফেরার পর আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছেন রোনালদ। প্রতি ম্যাচে গোল করা আর রেকর্ড করাটাকে রুটিন অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছেন। এই জন্যই তিনি বাকি সকলের থেকে আলাদা।