ইসলামি চরমপন্থাকে রুখে দিতে একটি নতুন আইন পাস করল ফ্রান্সের মন্ত্রিসভা। তবে মুসলিমদের টার্গেট করতে এই নতুন আইন আনা হচ্ছে বলে ইতিমধ্যে বিতর্ক উঠেছে।
বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই আইনটি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল মাখোঁর ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ নীতি অক্ষুণ্ন রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অনুমোদিত এই আইনে ঘরে ইসলামি শিক্ষার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া শিশুদের বয়স ৩ বছর হলেই স্কুল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া ঘরোয়া শিক্ষা দেওয়া যাবে না।
আইনটিতে বলা হয়েছে, প্রত্যেকটি মসজিদ সরকারিভাবে নিবন্ধিত হতে হবে, যাতে সহজে সেগুলোকে শনাক্ত করা যায়। মসজিদের জন্য বিদেশি ফান্ড নেওয়া যাবে, তবে সেটি ১০ হাজার ইউরোর বেশি হলে ঘোষণা দিতে হবে।
এ ছাড়া সরকারি অফিস, মার্কেট, সুইমিংপুল ও পরিবহন কর্মীদের মধ্যেও ধর্মীয় পোশাকের নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হয়েছে। ফলে এর মাধ্যমে নারীদের হিজাব পরার ওপর আরও বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হলো।
এদিকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, মসজিদ, সমিতি, সরকারি অফিস এবং স্কুলগুলোতে নজরদারি বাড়াতে আইনটি পাস করলো ফ্রান্স। তবে ৫০টি ধারার এ আইনে ‘ইসলাম’ বা ‘মুসলিম’ কোনো শব্দই উল্লেখ করা হয়নি।
মুসলিম বিরোধী আইনটি নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক উঠলে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ ক্যাসটেক্স জানান, এটি মূলত সুরক্ষার আইন। এ আইন কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে করা হয়নি। বরং চরমপন্থা থেকে মুসলিমদের এটি মুক্তি দেবে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবর মাসে ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে মুসলিম চরমপন্থীদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ইতিহাসের এক শিক্ষক। এরপর মুসলিমবিরোধী কড়া অবস্থান নেয় ফ্রান্স সরকার। ফলে সারা বিশ্বে সমালোচিত হয় ফ্রান্স।