জেমকন খুলনার অনুশীলন জার্সি গায়ে জড়িয়ে মিরপুরের একাডেমিতে আসলেন সাকিব আল হাসান। মাথা ভর্তি এলোমেলো চুল। মুখে মাস্ক। নিজ তাঁবুতে এগিয়ে যাওয়ার পথে দেখা হয়ে যায় জাতীয় দলের সতীর্থ তামিম ইকবালের সঙ্গে। চলে মিনিট দুয়েকের আলাপ।
ব্যাগ-ব্যাট রেখে সাকিব প্রস্তুতি নেন অনুশীলনের। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ক্রিকেটে ফিরবেন তিনি। ম্যাচের আগের দিন সাকিবের বাঁধাধরা কিছু নিয়ম আছে। এই যেমন নেটে ব্যাটিং করেন হালকা মেজাজে। গুটি কয়েক পেস বোলারকে খেলেন। শুধু টাইমিংটাই মিলিয়ে নেন। স্পিনে স্লগ করার চেষ্টা চালান। বোলিং করেন সর্বোচ্চ ১৫-২০টি। ফিল্ডিংয়ে খুব জোর দেন না। ফিটনেস নিয়ে কাজ করেন খানিকটা। বাকিটা ম্যাচ নিয়ে আলোচনা।
সোমবার সেই পুরোনো সাকিবের দেখা মিললো একাডেমি মাঠে। এতদিন ঘাম ঝরানো অনুশীলন করা বাঁহাতি অলরাউন্ডার বেশ ফুরফুরে। বোঝা যাচ্ছিল প্রস্তুতি পর্ব ভালোভাবে সেরে নিয়েছেন আগেই। এখন ম্যাচ খেলতেই মুখিয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম দিনই মাঠে নামছেন সাকিব। তার দল জেমকন খুলনার প্রতিপক্ষ তামিমের ফরচুন বরিশাল।
সাকিবের জন্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য আগামীকালকের দিনটি কতটা বড়, বোঝা গেলো তামিমের কথায়। ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক বলেন, ‘আমি নিশ্চিত ওর (সাকিব আল হাসান) জন্য অনেক বড় দিন। এক বছর পর সে মাঠে ফিরছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটা গুরুত্বপুর্ণ দিন। কারণ, ওর মতো সামর্থ্যবান খেলোয়াড় ফেরত আসছে। আমি নিশ্চিত ওর ভক্তরা ওকে দেখার জন্য মুখিয়ে থাকবে।’
তামিমের কণ্ঠে সুর মিলিয়েছেন বেক্সিমকো ঢাকার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তিনি বলেন, ‘সাকিবের ফেরা অবশ্যই বড় একটি বিষয়। কেবল আমি না, আমার মনে হয় পুরো বিশ্ব ক্রিকেটই অপেক্ষা করছে। সে নম্বর ওয়ান অলরাউন্ডার এবং আমাদের নম্বর ওয়ান খেলোয়াড়। এটা পুরো টুর্নামেন্টের জন্যই বড় একটা পাওয়া। তার সঙ্গে ও বিপক্ষে যে তরুণরা খেলবে, তারা অনেক কিছু শিখতে পারবে। আমার মনে হয় এটা ভবিষ্যতেও খুব কাজে দেবে।’
সাকিব খেলবেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অধীনে। তাকে পেয়ে উৎফুল্ল খুলনার অধিনায়ক, ‘সাকিবকে পেয়ে সত্যিই ভালো লাগছে। আমরা সবাই জানি সাকিবের গুরুত্ব কত। সেটা আন্তর্জাতিক মঞ্চে হোক কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেটে। আমরা সবাই খুশি ওর জন্য, কারণ সে ফিরে এসেছে এবং আমাদের দলেই খেলছে। তাকে একই দলে পাওয়া সত্যিই অসাধারণ।’
দীর্ঘদিন পর মাঠে ফিরলেও সাকিবের ওপর পূর্ণ আস্থা মাহমুদউল্লাহর। তার বিশ্বাস, অভিজ্ঞতা ও পারফর্ম সাকিবকে বহুদূর এগিয়ে নেবে। মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, ‘আমি সবসময় একটা ব্যাপার বিশ্বাস করি- সাকিবের যে সামর্থ্য, তাতে কোনও প্রশ্ন থাকবে না তার অর্জন কিংবা তার পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে। আমি বিশ্বাস করি প্রথম ম্যাচেই সে নিজেকে মেলে ধরতে পারবে। আমি তার মধ্যে ক্ষুধা দেখতে পাচ্ছি। সে খুব উদগ্রীব খেলার জন্য। মুখিয়ে আছে ভালো খেলতে।’